। মাহবুব আলম লাভলু।
‘বাজারে মুল্য সন্ত্রাস’ এমন শিরোনাম হারিয়ে গেলো কেন?
সচরাচর মাসের বাজার একবারে করি। পরিচিত মুদি দোকান থেকে কিনি বলে খুটিয়ে খুটিয়ে প্রত্যেকটি পণ্যমূল্য দেখা হয় না। হঠাৎ রান্না ঘরে মসুর ডালের টান পড়েছে। ইন্টারকমে দারোয়ানকে বললাম পাশের মুদি দোকান থেকে ১ কেজি মসুর ডাল কিনে পাঠাতে। দারোয়ান বললেন, স্যার কোনটা দিব? বললাম আমি দেশি চিকন দানার খোলাটা কিনি। ওটাই দিন। একটু পর আধা কেজির ২ প্যাকেটে ১ কেজি ডাল হাজির। বললাম খোলাটা নাই, প্যাকেট এনেছেন কেন? খোলাটা মোটা দানার, তাই এটা এনেছি। জিজ্ঞাসা করলাম কত দিতে হবে? বললেন ১৬২ টাকা। একটু ধাক্কা খেলাম। এত দাম। কিছু প্রকাশ না করে ডালের প্যাকেট রেখে ওনাকে যেতে বললাম। এরপর আধা কেজির প্যাকেটের গায়ে মুল্য লেখা দেখলাম ৮৫ টাকা। মনে হলো দ্রব্যমুল্যের পাগলা ঘোড়া যেভাবে ছুটছে তাতে এই দাম অস্বাভাবিক না।
কিন্ত ফের ধাঁধায় পড়লাম দৈনিক পত্রিকা পড়তে গিয়ে। প্রথম আলো আজ লিখেছে ‘মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট কাঁচা বাজারে বিসমিল্লাহ স্টোরে প্রতি কেজি মসুর ডাল (চিকন দানা) ১২২ টাকা।’ আমি বাসার পাশের মুদি দোকান থেকে যে ডাল আনালাম তার কেজি ১৬২ টাকা। প্যাকেজিং খরচসহ প্রতি কেজির দাম ১৩০ টাকা হলেও অবাক হোতাম না। কিন্ত এসিআই কোম্পানি যখন প্রতি কেজি ডালের দাম ১৯০ টাকা নির্ধারণ করেছে তখন এটাকে কি মুল্য সন্ত্রাস বললে ভুল বলা হবে? এক সময় জনকন্ঠে ‘বাজারে মুল্য সন্ত্রাস’ শিরোনামে খবর দেখতাম মাঝে মধ্যেই। কিন্তু এমন শিরোনামে খবর প্রকাশ করার সাহস এখন আর কেউ দেখায় না। তাহলে কি কর্পোরেট কোম্পানিগুলো তাদের ইচ্ছে মতো জনগনের পকেট কাটবে। খবরের কাগজের মতো রাষ্ট্রযন্ত্রও কি তাদের কাছে অসহায়?
লেখক- সিনিয়র প্রতিবেদক, দৈনিক যুগান্তর
(১৮মার্চ,২০২২ তারিখে প্রকাশিত লেখকের টাইমলাইন থেকে সংগৃহীত)
বা:স:/জ:নি:
পাঠকের মন্তব্য