। ওমর ফারুক শামীম।
আমি টিপের পক্ষে যেমন ছিলাম, তেমনি হিজাবের পক্ষেও আছি। তবে দুর্ভাগ্য আমাদেরই, যারা শেকড় ভুলতে পারি না, ইতিহাস অস্বীকার করতে পারি না। এ দেশে তারাই এখন খুব নিম্ন সংখ্যার মাইনোরটি।
আবহমান বাংলার সমৃদ্ধ সংস্কৃতি থেকে পালাবদলের ধার করা সংস্কৃতি আমাদেরকে আপাদমস্তক ঢেকে ফেলেছে। বিভিন্ন ইস্যুকে বড় আকারে পুঁজি করতে এ দেশে ধর্মের ব্যবহার হয় হরহামেশাই। কারণ আমার দেশের মানুষের ধর্মের চেতনা মারাত্মক, তবে অধিকাংশরাই অধার্মিক। ধর্মের লেবাসটাই আমাদের কাছে বড় পুঁজি। তাই টিপকাণ্ডের কাউন্টার হয়ে সামনে এসেছে এবার হিজাবকাণ্ড। হিজাব আমাদের দেশীয় পোষাক নয়। তবে পর্দা বা শালীনতার জন্য আমার দেশের বেশিরভাগ মা-বোনেরা এটি গ্রহণ করেছে সাচ্ছন্দ্যে। কারণ এটার সঙ্গে ধর্মীয় আচারের সংশ্লিষ্টতা আছে। আগে বড় ওড়না ও বোরখা দিয়ে পর্দা করতেন মা বোনেরা। এখন আধুনিক স্টাইলের হিজাব বোরখার প্রচলন বেড়েছে। এটি ভালো দিক।
২০১৬ সালে রাজধানীর হলি আর্টিসানে হামলার সময় জঙ্গিরা হিজাব পড়া শিক্ষকের স্ত্রীকে সন্তানসহ অনেক সমাদরে বের করে দিয়ে বাকিদের নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল। দেশের এক শ্রেণির গণমাধ্যম হিজাব পরে থাকা সেই নারীর গল্প বার বার জনসমক্ষে এনেছিলেন একটি উদ্দেশ্য নিয়ে। সেই উদ্দেশ্য জীবনাচারের সঙ্গে বাণিজ্যিকভাবেও সফল হয়েছে।
আমরা এখন আধুনিক স্টাইলের নানারকমের হিজাব পরতে পারছি। এবং এটাও বলতে পারছি মেয়েটি পর্দানশীন বা শালীন। তবে আসল তত্ব সবাই জানি। তিতো কথা বললে, বলতে হবে এ দেশে আগে মুসলমানও ছিল না পর্দাও মনে হয় ছিল না! সবই হাল আমলে তৈরি হয়েছে!
টিপকাণ্ড থেকে হিজাবকাণ্ড, সংস্কৃতির সঙ্গে ধর্মীয় আচারের এমন রেষারেষি আসলে আমাদের কোনদিকে নিয়ে যাচ্ছে, তা ভাবছি না। এমন বিদ্বেষ দেশের জন্য একটা বড় বিপর্যয়ও ডেকে আনতে পারে।
প্রতিবেশি দেশ মিয়ানমার ব্যালস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে, ভারত-পাকিস্তান আগে থেকেই পরমাণু অস্ত্রে সমৃদ্ধ, আর স্বাধীনতার পঞ্চাশে এসে আমরা নিজেকে সমৃদ্ধ করেছি জড়যন্ত্রে আর ষড়যন্ত্রে।
আসুন আমরা এসব থেকে মুক্ত হই।
লেখক- নিউজ এডিটর, দৈনিক জাগরণ
(৮এপ্রিল,২০২২ তারিখে প্রকাশিত লেখকের টাইমলাইন থেকে সংগৃহীত)
গ:মা:স:/জ:নি:
পাঠকের মন্তব্য