। নাজনীন আলম।
সারা দেশে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতৃত্ব দিনে দিনে দখল করে নিচ্ছে অনুপ্রবেশকারী ও পরিবার কেন্দ্রিক ক্ষমতাবানরা। ত্যাগী, আদর্শবান ও নিবেদিতপ্রাণ সংগঠকদের বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগকে বাপ দাদার সম্পত্তিতে পরিণত করেছেন তারা। জনপ্রতিনিধি/নেতাদের অনেকেই তৃণমূলের অংগ, সহযোগি বা সমমনা সংগঠনগুলোতে আধিপত্য বিস্তারে সদা তৎপর থাকেন। এজন্য দলের বাহির থেকে লোক আমদানীর কাজটি তারাই করে যাচ্ছেন।
নিজের স্ত্রী/স্বামী, ছেলে-মেয়ে, ভাই-ভাতিজা, পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন, কর্মচারী ও তল্পীবাহকদের মেধা ও যোগ্যতা কম থাকলেও বিভিন্ন সংগঠনের মূল পদে বসিয়ে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে ব্যস্ত তারা। তাদের আশির্বাদে কোন কোন ক্ষেত্রে ধণাঢ্য অনুপ্রবেশকারীরাও বিশেষ কারণে স্থানীয় পর্যায়ে দলীয় মনোনয়ন, পদ পদবী, ব্যবসা বাণিজ্য এবং দলীয় সুযোগ সুবিধা পেয়ে যাচ্ছে। প্রথমে বিভিন্ন স্তরে দলীয় যোগ্য ও জনপ্রিয় প্রার্থীর মনোনয়ন/পদায়নের বিরোধিতা করে থাকেন এসব জনপ্রতিনিধি/নেতা। তাতে ব্যর্থ হলে দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বা কৌশলে প্রার্থী দাঁড় করিয়ে বা অন্য কোন উপায়ে ল্যাং মারতে মরিয়া হয়ে উঠেন; কোন ক্রমেই পরিবার বা নিজের গন্ডির বাইরের কাউকে সুযোগ দিতে চান না তারা। এছাড়া, কোন কোন সম্মানিত সিনিয়র নেতা ব্যক্তির চেয়ে বাপ দাদার পরিচিতিকেই বড় করে দেখেন।
জনপ্রিয়তা, যোগ্যতা, অবদান এবং সাংগঠনিক দক্ষতা থাকা সত্বেও দলীয় পদ এবং মনোনয়ন বঞ্চিত করা হয় তৃণমূলের সৎ, জনপ্রিয়, মেধাবী এবং দক্ষ রাজনীতিবিদদের। এমনকি দলের কর্মকান্ডে সক্রিয় হতে বাধা দেয়াসহ দলীয় সুযোগ সুবিধা থেকে ক্ষমতার জোরে বাহিরে রাখা হয় এবং আর্থিক মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেয়া হয় তাদের। শুধু তাই নয়, সমর্থকসহ তাদের নিশ্চিহ্ন করতে মামলা হামলা এবং অত্যাচার- নির্যাতনসহ বিভিন্নভাবে হেনস্থা করা হয়। এভাবে বার বার বঞ্চনা ও হয়রানীতে অতিষ্ঠ হয়ে অনেকেই নিষ্ক্রীয় হয়ে পড়েন। কেউ কেউ হারিয়ে যেতে বাধ্য হন রাজনীতির মাঠ থেকে। ফলে, জনপ্রিয়, যোগ্য ও আদর্শবান নেতৃত্ব বিকশিত কম হচ্ছেতৃণমূলে; দল হয়ে যাচ্ছে পরিবারের পকেটবন্দি।
কোন কোন নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের বিতর্কিত ও বেপরোয়া কর্মকান্ডে এত উন্নয়নের পরেও দল হচ্ছে সমালোচিত; বাড়ছে না কর্মী৷; বেড়েছে চাটুকার! ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে যোগ্য, জনপ্রিয়, আদর্শবান, মেধাবী ও নিবেদিতপ্রাণ সংগঠকদের মাইনাস করতে করতে দিনে দিনে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে আওয়ামী লীগের গর্বিত তৃণমূলকে।
অতীতে বিবেচনা করলেও ইদানিং দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন আসনে উপনির্বাচনে এমপি পদে পরিবারিক বলয়ে কাউকে মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে না। এছাড়া, সম্প্রতি জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন দলীয় পদ ও মনোনয়ন নিতে জনপ্রতিনিধি ও নেতাদের সন্তানদেরকে স্ট্রাগল করে আসতে হবে। তার পরেও নেত্রীর প্রতি আস্থা ও ভালবাসার কোন কমতি নেই তৃণমূলের বঞ্চিত নেতাকর্মীগণের ।
লেখক - কার্যনির্বাহী সদস্য, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগ।
(২৬মে,২০২২ তারিখে প্রকাশিত লেখকের টাইমলাইন থেকে সংগৃহীত)
রা:স:/জ:নি:/০৪-০৬-২০২২
পাঠকের মন্তব্য