জনসংযোগ প্রতিবেদন । এম আনিছুর রহমান
আভিজাত্যের ছোঁয়ায় ও সময়ের চাহিদা পূরণের প্রত্যাশা নিয়ে ২৭মে,২০২২ তারিখে উদযাপিত হল উদয় বাজারের ১ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ময়মনসিংহের জিলা স্কুল মোড়ে অবস্থিত জেলা শহরের মেঘা শপিং মল; উদয় বাজারের অভ্যন্তরে রাত ১০:৩০ মিনিটে কেক কেটে এই অনুষ্ঠানের উদ্ভোধন করেন জেলা আওয়ামী লীগ এর সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফ হাসান অনু। উদ্ভোধন পরবর্তীতে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ ও প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে কুশলাদি বিনিময়ের পরে তিনি জনসংযোগ নিউজের সাথে একান্ত আলাপনে তুলে ধরেন দেশের বর্তমান ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ।
তিনি ব্যবসায়ীদের অতি মোনাফালোভী মনোভাব, সিন্ডিকেট কারসাজি ও কুট-কৌশলী বাজার ব্যবস্থাপনার যেমন সরাসরি সমালোচনা করেন ; তেমনি করোনা মহামারি ও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ সহ যেকোন বৈশ্যিক বিশ্ব বিপর্যয়ে তাদের সংবেদনশীলতা ও ধৈর্যেরও প্রসংশা করেন। দেশের সাধারণ মানুষের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন- তারা যেন বাজারের মূল্য সন্ত্রাস বিষয়ে সরাসরি সরকারকে অবগত করেন এবং সবসময় আন্তর্জাতিক বাজার দর সম্পর্কে জেনে, বুঝে যেন সরকারের সমালোচনা করেন।
উদয় বাজারের বিগত সাফল্য বিবেচনায় তিনি বলেন- শুধু অভিজাত শ্রেণী নয় পাশাপাশি মধ্যবিত্তদের চাহিদাকেও গুরুত্ব দিয়ে উদয় বাজারের ভবিষ্যত নির্মাণ করা উচিত। উচ্চবিত্তদের বাজারের স্থান হওয়ায় এখানে দরিদ্রের বাজারের সুযোগ না থাকলেও তারা যেন নিয়মিত সাহায্য ও সহযোগীতা পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্যও তিনি উদয় বাজার কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সময়ের চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়ে উদয় বাজারের নতুন আঙ্গিকে পথচলার এই উদ্যোগকে তিনি স্বাগত জানান।
ব্যবসায়িক আলোচনা শেষে প্রসঙ্গভেদেই চলে আসে রাজনৈতিক বিষয়বস্তু। তিনি একেবারে স্কুল জীবন থেকেই রাজনীতিমুখী ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের জীবনী পড়তে, জানতে ও অনুধাবন করতে ভালবাসতেন। বিশেষকরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে হৃদয়ে ধারণ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলতে তিনি আজও বদ্ধপরিকর। সেই ধারাবাহিকতার জন্যই তিনি হতে পেরেছিলেন ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও পরবর্তীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক। বর্তমানে তিনি ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি আসন্ন ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কেন হতে চান ? জনসংযোগ নিউজের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- জননেত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যেই নেতৃত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে ছাত্রলীগ বেকগ্রাউন্ডকে বাধ্যতামূলক করেছেন। বিশেষকরে, যারা ওয়ানইলেভেন সহ আওয়ামী লীগের দু:সময়ে দলের পাশে থেকে নিজ জীবনকে বাজি রেখে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের প্রতি জননেত্রী সবসময়ই বিশেষ আস্থা রাখেন। যেহেতু এবার তিনি তাদের নিয়েই আগামীর পথ চলবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন; সেহেতু আমি আমার নিজের বিষয়ে বলতেই পারি “ সময় এবার- ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নেওয়ার”।
যদি দায়িত্ব পান তাহলে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে আপনার ভবিষ্যত সম্পর্ক কেমন হবে ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- যেকোন দায়িত্ব নেওয়ার পূর্বে দেখা যায়; প্রায় সবাই নেতাকর্মীদের সাথে খুবই প্রাণবন্ত থাকে, অফুরন্ত সময় দিয়ে থাকে কিন্তু দায়িত্ব পাওয়ার পরক্ষণেই ব্যস্ততা বা নীতিগত অপ্রতুলতা বা ইচ্ছা থাকা স্বত্বেও অযাচিত অনিহা; সে যে কারনেই হোক না কেন, দায়িত্বশীল নেতৃত্বের সাথে সকলের কমবেশী দূরত্ব সৃষ্টি হয়ে যায়। আমি প্রথমেই এই বৈষম্যটি দূর করব, যা বর্তমান রাজনীতিতে অতিগুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি বর্তমানে যেভাবে গণসংযোগ করছি, ভবিষ্যতে দায়িত্ব পেলে আরও বেশী করে এই কাজ করব যেন সাধারণ নেতাকর্মীদের সাথে দায়িত্বশীল নেতৃত্বের মাঝে কোন দূরত্ব না থাকে, যেন কেন্দ্র আর তৃণমুল বসবাস করে খুব কাছাকাছি। এ প্রসঙ্গে এক কথায় বলতে গেলে বলব ‘’সময় যখন সময় না থাকার, সময়ই তখন সময় দেওয়ার’’। কর্মীদের সময় দিতেই হবে সবসময়, নয়ত নেতার সময় ফুরিয়ে যাবে। হচ্ছেও তাই, তা নাহলে হাইব্রীডদের আগমন হল কিভাবে? যদি মান অভিমান ভেঙ্গে নেতৃত্বের প্রত্যাশায় সাবেক ছাত্রলীগ আবার জাগ্রত হয়, তাহলে অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবেনা হাইব্রীডদের। তখন দল হবে আরও প্রাণবন্ত, আরও গতিশীল, সত্যিকার অর্থেই জেগে উঠবে এক অনুভূতির আওয়ামী লীগ।
উদয় বাজারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফুর রহমানের আয়োজন ও ব্যবস্থাপনায় উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফ্রন্টিয়ার রিপোর্টার্স সোসাইটি অব বাংলাদেশ এর সভাপতি ও বাংলা টিভির ব্যুরো প্রধান মিনহাজ শেহাব ফুয়াদ এবং ময়মনসিংহ জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ রানা ও দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার এর জেলা প্রতিবেদক সুলতান রহমান বাপ্পী।
জ:প্র:/জ:নি:/১০-০৬-২০২২/০০৭
পাঠকের মন্তব্য