শুভেচ্ছা সংযোগ । এম আনিছুর রহমান
ময়মনসিংহের তরুণ রাজনীতিবিদদের আলোচনা আসলেই যার নাম অবধারিতরুপেই স্থান পায় তিনি মোহিত উর রহমান শান্ত। তার বাবা অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ছিলেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান, সদর আসনের সংসদ সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সফল ধর্ম মন্ত্রী ও সবশেষে সাম্প্রতিক পেয়েছেন একুশে পদক। মোহিত উর রহমান শান্তু ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং বর্তমানে ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। বাবার দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অবসান লগ্নে স্থানীয় রাজনীতির বর্তমান হাল ধরেছেন শান্ত।
একসময় শহরের নাটকঘরলেনই ছিল জেলা আওয়ামী রাজনীতির মূল কেন্দ্রবিন্দু। কালের বিবর্তনে ক্ষমতার পালাবদলে, কিছুটা নৈতিক অবক্ষয়ে; আবার অনেকটা সেচ্ছাচারিতার কৌশলী বাতায়নের এলোমেলো ঘূর্ণিপাকে রাজনৈতিক প্রস্থানের কারনে সেই নাটকঘরলেন আর এই নাটকঘরলেন এর মাঝে এখন বিস্তর পার্থক্যই বিরাজমান। এই পার্থক্যটি পরিবর্তনের নাকি রুপান্তরের সে আলোচনায় না যাওয়াই ভাল তবে রাজার ছেলেকে নায়ক রাজ নয় বরং যুবরাজই বলা হয় একথা সত্য।
স্থানীয় অনেকের মতে রাজনীতি এখন কালিবাড়ীতে, নাটকঘরলেন এ নয়; আবার অনেকের মতে স্থানীয় রাজনীতি এখন কেন্দ্রে, তাদের মাঝে নয়; আবার অনেকেই মনে করেন যার যার রাজনীতি এখন তার তার পকেটে, কারও চেইন অব কমান্ডে নয়। মূলত: কে যে কখন কার পিছনে বুঝিনা কে খাঁটি ! আসলে সবাই সবার পেছনেতে, সবার হাতেই কাঠি। বঙ্গবন্ধুর জীবদ্দশায় শেখ হাসিনার কদরের কোন সীমা ছিলনা কিন্তু তার মর্মান্তিক মৃত্যুবরণের পরবর্তীতে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পরে তারাই সবচেয়ে দূরে চলে গিয়েছিল যারা তার সবচেয়ে কাছে অবস্থান করেছিল। এখন আবার তাদের দূসররাই সবচেয়ে কাছে অবস্থান করছে আর দূরে সরে গেছে তারা, যারা সে সময় সবচেয়ে কাছে অবস্থান করেছিল। এটা হয়ত দেশীয় রাজনীতির সাপলুডু খেলা। যারা খেলতে জানে তাদের জন্য এ খেলাটা খুব কঠিন কিছু নয় আর যারা খেলতে জানেনা তাদের জন্য রাজনীতিটা ব্যবসা বাণিজ্য ছাড়া আর কিছুই নয়।
মোহিত উর রহমান শান্ত পৈতৃক সূত্রেই রাজনৈতিক উত্তরাধিকার; কোন রাজনৈতিক ব্যবসায়ী নন। তাই তিনিই ভাল জানেন তার রাজনৈতিক ভবিষ্যত কি? আর যারা ভাবছেন তার ভবিষ্যত শেষ বা দূদুল্যমান; আসলে তারা নিজেরাই রাজনৈতিক জগতে অর্বাচিন। স্থানীয় উদাহরণ স্বরুপ : শেখ হাসিনা কর্তৃক গফরগাঁও, ফুলপুর ও হালুয়াঘাটের নমিনেশন বিন্যাস বিবেচনায় মোহিত উর রহমান অবশ্যই ময়মনসিংহ সদর আসনের প্রধান প্রার্থী কারন এই আসনগুলোতে যুবরাজরা বিদ্যমান ও নায়করাজরা দৃশ্যমান। রাজনৈতিক কৌশলগত কারনে সদর আসনটি মহাজোট অংশীদার জাতীয় পার্টি তথা বিরুধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদকে দেওয়াটা বাধ্যতামূলক ছিল বিধায় তিনি তখন এই আসনের টিকিট থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সার্বিক বিবেচনায় বেগম রওশন এরশাদ কর্তৃক ছাড় দেওয়ার পর বা তার জীবনাবসানের পর অবশ্যই ময়মনসিংহ সদর আসনের নমিনেশনটি এই যুবরাজের দখলেই আসবে। যদি ভবিষ্যতেও মহাজোট অটল থাকে তাহলে বেগম রওশন এরশাদের জীবদ্দশায় এই আসনে অন্য কেউ নমিনেশন পাবেনা, এটা নিশ্চিত। স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ সহ মোহিত উর রহমানের অনুসারীরা তাই মনে করেন।
তবে পরিস্থিতি যাই হোক না কেন মোহিত উর রহমান কখনই জনবান্ধব কর্মসূচী থেকে বিচ্যুত থাকেননি। তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কর্মসূচীতে বিভিন্নরকম পরিবর্তন এনেছেন। যুগের তালে তাল মিলিয়ে আধুনিক ছোঁয়ায় পরিচালিত তার বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়নের পূর্বে মূলত: সেইসব কর্মসূচীর ধারাগুলো অনেকে অনুধাবনই করতে পারেনি। তাই তার সমালোচকদের একেক সময় মনে হয়েছে তিনি আর মাঠে নেই। আবার যখনই মাঠ পর্যায়ে সেইসব কর্মসূচীর বাস্তবায়ন হয়েছে তা দেখে আবার তারাই বিস্মিত হয়েছে এবং নিয়মিত হচ্ছে। হারিয়ে যাওয়ার প্রশ্নই উঠেনা বরং তিনি জনতার মাঝে নিত্য নতুনে আবির্ভাব হন সবসময়। তাই তাকে “ জনবন্ধু” উপাধি দেওয়া যেতেই পারে। জেলা শহরের এই জনবন্ধুর শুভ জন্মদিনে জনসংযোগ নিউজের পক্ষ থেকে রইল আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।
শু:স:/জ:নি:/১৪জুন,২০২২
পাঠকের মন্তব্য