গণমাধ্যম সংযোগ । কাইসার রহমানী
ইলেক্ট্রা কমপ্লেক্স,ঈদিপাস কমপ্লেক্সসহ নানান কমপ্লেক্স আছে। এসবের কথা শুনলে, যারা এসব টার্ম আবিস্কার করেছে তাদের উন্মাদ মনে হয়। অনেকেই এসব বিশ্বাসই করেননা। বিশ্বাস না করলেও এসব যে আছে, কোন কোন ঘটনা সেকথাই প্রমাণ করে।
ওমর সানী সাহেব, মৌসুমী ম্যাডামের মতো মানুষেরা নতুন নতুন কমপ্লেক্স সামনে নিয়ে আসেন! আর এসব স্টাবলিস্ট করেন তথাকথিত গণমাধ্যমগুলো।
শিল্পের একটা গুণ হচ্ছে, সব কিছুই শিল্প না। যেমন ধরেন, একজন কবির জীবনী আপনি ভিডিও চিত্রে তুলে ধরছেন। কবি কলম দিয়ে কিভাবে লেখেন, সেটি দেখাচ্ছেন। কিন্তু কবি কিভাবে পায়খানা করেন, সেটি আপনি দেখাবেননা। কারণ সেটা শিল্পের বিরুদ্ধচারণ হবে। এমননা যে তা দেখালে দর্শক দেখবেননা। কিন্তু মোটা দাগের হবে বলে আপনি তা করবেননা। তেমনি রিপোর্টিংয়ের একটা নিয়ম আছে। সব কিছুই সংবাদ না। চুজিংয়ের একটা বিষয় থাকে।
মৌসুমী ম্যাডাম সানী সাহেবকে ” ভাই ” বললেন। আর সস্তা কাটতি পাবার আশায় আমাদের মিডিয়াগুলো ( সব না) তা প্রচার করে ব্যাপক ক্রেডিট নিচ্ছে। তারা যে আপডেট এটা জানান দিচ্ছে। নিজেদের সস্তা করতে করতে এরা চলে যাচ্ছে নিচের দিকে। এসব দেখে মনে হচ্ছে খোদ মিডিয়াগুলোর ( সব না) সাংবাদিক ( কেউ কেউ), নিউজ এডিটর ( কেউ কেউ) সংবাদ প্রধানরা ( কেউ কেউ) কমপ্লেক্সে ভুগছেন, তাই চুজিংয়ের কোন বিষয় নাই, যা পাচ্ছ তাই ছেড়ে দাও।
মৌসুমী ম্যাডাম কিছু না মীন করে সানীকে “ভাই” বলতেও পারেন। আবার ইচ্ছা করেও বলতে পারেন, কোন উদ্দ্যেশ্য নিয়েও বলতে পারেন। কিন্তু একজন সচেতন সাংবাদিক হয়ে, আপনিও তার সুরে সুর মেলাবেন, নীতির তোয়াক্কা না করে ? মাকে ছেলে, বোনকে ভাই, মেয়েকে বাবা বাজে ভাবে ব্যবহার করেছেন এমন সংবাদও রসময় গুপ্তের ভাষায় রসিয়ে রসিয়ে প্রচার করা হয়। আপনারা যে কমপ্লেক্সে ভুগছেন এগুলোর প্রচারের ধরণ সেকথাই প্রমাণ করে। এমননা যে সেগুলো সংবাদ না, তবে সংবাদ প্রচারের নানান ভাষা, কায়দা আছে। কায়দা কানুন করে শালীনতার মধ্য থেকে সবই প্রচার করা যায়।
দয়াকরে জাতির জন্য জায়েদ, সানী, হিরো আলম, বাতাবি লেবু, সাঁকো নির্মাণ, খড়ের গাদায় আগুন, মাজরা পোকা, মাথার টুপি, আম খেতে ভালবাসেন পড়শী, সিদ্দিকের স্ট্যাটাস টাইপের নিউজগুলো যেভাবে প্রচার করার দরকার সেভাবে করেন। তাদের এতই গুরুত্ব দিয়েননা যে, মাননীয় শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া, স্বাস্থ্যখাত, শিক্ষা, নির্বাচন, বিশ্ব রাজনীতি, বাসস্থান, খেলাধূলা ইত্যাদি বিষয়ে অনুসন্ধানী সংবাদগুলো হারিয়ে যায়। নাহলে আগামীতে পেশার অস্তিত্ত্ব সংকটে পড়বেন এটা নিশ্চিত। সুন্দর দেশ ও মানুষ গঠনে শক্তিশালী গণমাধ্যমের বিকল্প নেই।
লেখক- সিনিয়র রিপোর্টার, অপরাজেয় বাংলা । ফরমার রিপোর্টার- নিউজ ২৪ বিডি, দেশ টিভি
(১৩জুন,২০২২ তারিখে প্রকাশিত লেখকের টাইমলাইন থেকে সংগৃহীত)
গ:স:/জ:নি:/২৩-০৬-২০২২
পাঠকের মন্তব্য