জনসংযোগ প্রতিবেদন । জনসংযোগ নিউজ ডেস্ক
শিক্ষা, শান্তি ও ঐতিহ্যের শহর বলে খ্যাত ময়মনসিংহ শহরের বর্তমান অবস্থান সম্পূর্ণ ভিন্ন। রাজনীতির মেরুকরণের পাশাপাশি পরিবর্তন হয়েছে শহরের কালচারেও। একটি সময় ছিল যখন শিক্ষক পড়াতেন ছাত্রদের; আর এখন ছাত্ররা পড়ায় শিক্ষকদের। রাজনীতিতেও ছিল হাজার হাজার কর্মীদের একজন নেতা আর এখন চারিদিকে কর্মীশূণ্য হাজার হাজার নেতা। শহরে বহুতান্ত্রিক রাজনৈতিক গ্রুপিং, নেই কোন প্রটোকল। ময়মনসিংহ শহর বর্তমানে ভাইতন্ত্রবাদের শহর। এখানে কেন্দ্র কি বলে তার চেয়ে ভাই কি বলে তারই প্রাধান্য বেশী। পূর্ণাঙ্গ জেলা/আহ্বায়ক কমিটি থাকা সত্বেও সম্মিলিত রাজনৈতিক কর্মসূচী পালনে অনিহা দেখা যায় ভাইদের মাঝে। ক্ষমতাসীনদের মাঝেই এ দৃশ্য সবচেয়ে বেশী দৃশ্যমান।
শহরে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির ক্ষেত্রেও যোগ হয়েছে ভিন্ন মানের অন্যমাত্রা। পুরাতন ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি নতুন ব্যবসায়ী/উদ্যোক্তাদের কোন প্রকার ছাড় দিতে নারাজ শহরের উঠতি চাঁদাবাজরা। শহরের বুকে নতুন কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দিলে বা জমি ত্রয় করে বাড়ী নির্মাণ করতে গেলে স্থানীয় উঠতি মাস্তানদের মোটা অঙ্কের চাঁদা দেওয়াটা বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদি কেউ এসকল বিষয়ে চাঁদা দিতে না চায় তবে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে নিয়মিত আড্ডা বসানো হয় এবং কাষ্টমারদের নানারকম রুচিহীন বক্তব্যে বিরক্ত করে চলমান ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ব্ল্যাকমেইলিং করে হলেও চাঁদা আদায় করা হয়। এমনকি চাঁদা আদায়ে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে রেফারেন্স-ক্লো ব্যবহার করা হয় যেন চাঁদা আদায়ের বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ না হয়ে সহিশুদ্ধ হয়।
রাজনৈতিক প্রটোকল চেইন ভেঙ্গে যাওয়ায় এসব অনৈতিক কার্যক্রম রোধে “নো রিস্ক নো গেইন” সংকল্পে আছেন ভাইতন্ত্রবাদের এই শহরের বর্তমান ভাইয়েরা। তবে আশা এখনও হতাশার তলানিতে পৌঁছায়নি। এখনও অনেকটাই চেইন অব কমান্ড ধরে রেখেছেন জেলা শহরের প্রজন্মের শেষ আশ্রয়স্থল বলে খ্যাত জেলা আওয়ামী লীগ সহসভাপতি ও এফবিসিসিআই এর সিনিয়র সহসভাপতি আমিনুল হক শামীম (সিআইপি)। যদি কোনভাবে এসকল বিষয়াদি তার সামনে তুলে ধরা যায় তাহলে তিনি তা নির্মূলে সংশ্লিষ্টদের সর্বাত্নক সহযোগীতা করেন। জেলা শহরের আওয়ামী রাজনীতিতে বিষয়টি প্রমাণিত।
ময়মনসিংহ শহরের এসকল অরাজকতার বেশ কিছু স্বচ্ছ তথ্যচিত্র নিয়ে গত ১৯অক্টোবর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁনের সঙ্গে তার ধানমন্ডির বাসভবনে দেখা করেন ফ্রন্টিয়ার রিপোর্টার্স সোসাইটি অব বাংলাদেশ (এফ,আর,এস,বি) এর ময়মনসিংহ জেলা শাখার শীর্ষ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। মন্ত্রী এসময় খুব মনোযোগ সহকারে উত্থাপিত সকল সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিবরণ শুনেন।
বিশেষকরে, ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রলীগের বর্তমান আহ্ববায়কের বড় ভাই নওশেদ আহমেদ অভি তথা “অভি গ্রুপের সাম্প্রতিক নৈরাজ্যের ঘটনাবলী মন্ত্রীকে ভাবিয়ে তুলে। এসময় এখানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিবি প্রধান ডিআইজি হারুন অর রশিদ এবং নবনিযুক্ত ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জ সৈয়দ নুরুল ইসলাম। জেলা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি এসকল ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগ নেতা সিআইপি আমিনুল হক শামীমকেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তৎক্ষণাৎ মুঠোফোনে অবগত করেন এবং শহরে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি নির্মূলে প্রয়োজনীয় দলীয় ভূমিকা নিতে পরামর্শ প্রদান করেন। “যদি দেশে ব্যবসায়ীরাই ভাল না থাকে তবে আমরা ভাল থাকব কিভাবে”? তার প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে সিআইপি আমিনুল হক শামীম খুব গুরুত্ব সহকারে দেখেন।
এরপর গত ২২অক্টোবর তারিখে জেলা আওয়ামী চেইন অব কমান্ড আমিনুল হক শামীমের সাথে (এফ,আর,এস,বি) ময়মনসিংহ জেলা শাখার শীর্ষ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ রাজধানীর মহাখালীতে তার নিজ কার্যালয়ে এক সৌজন্য মতবিনিময়কালে তুলে ধরেন; ময়মনসিংহ শহরে অভি গ্রুপ সহ অন্যান্য গ্রুপের সাম্প্রতিক কর্মকান্ডের বিভিন্ন তথ্যচিত্র। সবকিছু শুনে ও দেখে তিনি সরাসরি কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জকে এ সকল ব্যাপারে অবগত করেন এবং তাদের দ্রুত গ্রেফতার সহ প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ প্রদান করে শহরের সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজ নির্মূলে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করেন।
সন্ত্রাসী যে গ্রুপেরই হোক না কেন, এমনকি তারা যদি তার নিজের গ্রুপেরও হয় তবুও তাদেরকে কোন প্রকার ছাড় না দিয়ে আইনের আওতায় আনা উচিৎ বলে তিনি মনে করেন। একইসাথে এখন থেকে এ সকল বিষয়ে নিয়মিত সিরিজ প্রতিবেদন প্রকাশ করবে বলে (এফ,আর,এস,বি) ময়মনসিংহ জেলা শাখার সকল সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের পক্ষে জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সম্মিলিতভাবে তার সাথে একাত্মতা ঘোষনা করেন।
জ:প্র:/জ:নি:/১০-২৭-২২
পাঠকের মন্তব্য