গণমাধ্যম সংযোগ । হারুন উর রশীদ
আমরা বিচার করি ব্যক্তিগত চিন্তায়। কিন্তু এটা ঠিক নাও হতে পারে। আমি যাকে খারাপ মনে করি তিনি খারাপ নাও হতে পারেন। যাকে ভালো মনে করি তিনি ভালো নাও হতে পারেন। খারাপ এবং ভালো অনেক সময়ই আপেক্ষিক। ব্যক্তি তার নিজস্ব চিন্তায় এটা নির্ধারণ করেন। কেউ করেন তার বিশ্বাস দিয়ে।
আমি একজনকে খারাপ মনে করলে তিনি খারাপ এমন ভাবার কারণ নেই। তাকে ভালো মনে করেন এমন অনেক লোক আছেন। আবার আমি একজনকে ভালো মনে করলেই তিনি ভালো সেটা নিশ্চিত নয়। কারণ তাকে খারাপ মনে করেন এরকম লোকও আছেন।
তাহলে বিষয়টি কী দাঁড়ালো? চূড়ান্ত অর্থে ভালো বা খারাপ এই রায় দেয়া খুবই কঠিন। আর ভালো ও খারাপের কোনো একক মাপকাঠি নেই, একক কোনো দর্শন নেই। তাই এই চিন্তায় আপসেট হওয়ার আশঙ্কা খুব বেশি। এমন একজন লোককে কি আপনি দেখাতে পারবেন যাকে সবাই ভালো বলেন অথবা যাকে সবাই খারাপ বলেন?
তবে একটি বিষয়ে কিন্তু সবাই এক। সেটা কী?
প্রত্যেকেই নিজেকে নিজে ভালো মনে করেন। এই নিজেকে ভালো মনে করার মধ্যেও আছে একটি দর্শন। তার মূল হলো নিজে যেভাবে আমরা চিন্তা করি সেভাবেই বিচার করি। কিন্তু এর একটি ইতিবাচক দিকও আছে। যে যেভাবেই চিন্তা করুক না কেন সেটা সে ভালোর জন্যই করে। সে ভালো চায়। কল্যাণ চায়। কিন্তু তার নিজের মতো করে।
আর ক্ষতিকর দিক হলে সবাই যখন নিজের মতের সঙ্গে মিলিয়ে ভালো চায় তখন যারা দ্বিমত করেন তাদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব হয়। এই দ্বন্দ্ব চিন্তা এবং তর্কের মধ্যে থাকলে তা স্বাস্থ্যকর। কিন্তু সেটা এর গন্ডি ছাড়িয়ে গেলে তখন হয় সংঘাত, সংঘর্ষ, যুদ্ধ।
তাহলে কেউ সবার ভালো চাইলেও সংঘাত হতে পারে। সংঘর্ষ হতে পারে। কারণ একজন যে ভালো চান, তা চান তিনি যেভাবে চিন্তা করেন সেভাবে। অন্যরা সেটাকে আবার ক্ষতিকর মনে করতে পারেন।
খুবই জটিল মনে হচ্ছে? আসলে জটিলই। আমরা সাদা চোখে যতই দেখার কথা বলি আসলে সেটা কথার কথা। সেটা সম্ভব নয়। সম্ভব নয় বলেই পৃথিবীতে যুদ্ধ চলবে। আবার শান্তির কথাও বলা হবে। তবে সেটা যদি চিন্তার যুদ্ধে সীমাবদ্ধ রাখা যায় তাহলে আমার মনে হয় তা পৃথিবীর অগ্রগতির জন্য ভালো।
বলতে পারেন এই দ্বন্দ্ব কত দিন চলবে? আমার মনে হয় অনন্তকাল। কারণ কোনো কালে পৃথিবীর সব মানুষের কি এক চিন্তা ও মতের হওয়া সম্ভব?
(০১/১১/২০২২ তারিখে প্রকাশিত লেখকের টাইমলাইন খেকে সংগৃহীত)
লেখক- সিনিয়র সাংবাদিক
গ:স:/জ:নি:/০৫-১১-২০২২
পাঠকের মন্তব্য