শুভেচ্ছা সংযোগ । ড. অখিল পোদ্দার
তিমির হননের সংগঠক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৭৩ তম জন্মদিন আজ
বহুমাত্রিক ঋতুর আবর্তে আলাদা এক আবহ শরতের; সদ্য জেগে ওঠা নবীন চরের মতো স্নিগ্ধ একটা ঘ্রাণ তাতে বিদ্যমান। রূপের মাধুর্য, রসের সঞ্জিবনী আর নীল আকাশে শাদা মেঘের আবরণে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে সোঁদা মাটির কাশফুল। সন্ধ্যা থেকে ভোর অব্দি স্মিত সমীরণের মধুলগণে জন্মেছিলেন তিনি। যিনি গ্রাম থিয়েটারের বদৌলতে চিনেছেন মানুষ, জেনেছেন প্রকৃতি আর আদিমজন থেকে জাদুবাস্তবতার শহর ঢাকা। তিনি আর কেউ নেন—পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে কেউবা চেনেন নাট্যজন হিসেবে। কুশীলবের বাইরে যিনি পুরোদস্তুর বাহুবলী সাংবাদিক। বহুগুণে গুণান্বিত এ মানুষটির আজ জন্মদিন। পা রাখলেন ৭৪-এ।
গুগলের তথ্য বলছে, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৫০ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর শহরে। কঞ্চির কলমে হাতেখড়ি গোপালগঞ্জের স্কুলে। অতপর রাজেন্দ্র কলেজের চৌহদ্দি টপকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। পাঠের বিষয়-গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা।
বহুবিধ কারণে পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠ বিশেষ পরিচিত। কেউ তাঁকে জেনেছেন নাট্যজন হিসেবে, কেউ কেউ আবৃত্তিকার, অন্যরা চেনেন মুক্তবুদ্ধির ঝড়ো আন্দোলনের প্রমিথিউস রূপে। একাত্তরের রণাঙ্গণে তিনি ছিলেন আগুনমুখো নদীর মতো ঝাঁঝালো। যাঁর বারুদে দগ্ধ হয়েছিল রাজাকার আলবদর আলশামস আর পাকি দোসরেরা। এসব কারণে মামলা—হামলা আর ষড়যন্ত্র আঠার মতো লেগেই আছে পিছে—পিছে। তবু অন্তর্গহীনে এখনও শক্তিশালী পীযূষ স্বপ্ন দেখেন-এ বাংলা সত্যি সত্যিই একদিন আপামর মানুষের হবে। থাকবে না ভেদাভেদ, জেদাজেদি আর অন্তর্কোন্দল। জাতির জনকের স্বপ্নের মানচিত্রজুড়ে প্রকাশ পাবে ধারাবাহিক স্বস্তি আর অবারিত শান্তি। চেতনার গোলা ভর্তি হবে কোটি জনতার সমস্বরে।
‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’ নামের সংগঠনটি তাঁর হাতে গড়া। যেটি বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষকে নিয়ে আবহমান বাংলার ঐহিক দর্শন প্রচারে ব্যস্ত। এর বাইরেও তিনি ঐতিহ্যবাহী টেলিভিশন চ্যানেল একুশে টিভির প্রধান নির্বাহী। ব্যস্ততার ফোকর গলে নিয়মিত কলম ধরার চেষ্টা করেন সমসাময়িক ইস্যুতে। বাছাই করা সিনেমা আর বিষয়ভিত্তিক নাটকে করেন অভিনয়। যোগ দেন বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের বক্তৃতা আর মিছিলে। ঝুঁকি আর চ্যালেঞ্জ মেনে স্রোতের বিপরীতে এখনও পাথরভেলা হয়ে বাঙালির চিরায়ত জীবনদর্শনের দীক্ষা প্রচারে ব্যস্ত। এসব বহুমূখী কারণে পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় ৭৩ বছর বয়সেও সন্ধ্যাকাশের দূরতম নিকটতারার মতো জ্বাজ্বল্যমান।
একটি প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেলে এ লেখার অমসৃণতা খোঁচাবে বটে! তখন ২০০৪ সাল। চারপাশে বঙ্গবন্ধুবিরোধী গুমোট গরম পরিবেশ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলতে হয় ফিসফিস করে-ইঙ্গিত আকারে। ক্রান্তিকালের আঁধার কাটাতে কলম ধরলেন নমস্যজন আবদুল গাফফার চৌধুরী। বাংলাদেশের স্থপতিকে নিয়ে লিখলেন মঞ্চনাটক। আর সেই নাটকের ‘প্রোটাগনিস্ট ক্যারেটার’ নির্বাচন করলেন পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কারণ অন্ধকার ভেদ করে আলোকজ্জ্বল রঙ্গমঞ্চে শেখ মুজিবের কথা বলার মতো কাঙ্ক্ষিত কাউকে গাফফার চৌধুরী সেদিন পাচ্ছিলেন না। ঝড়ো নাবিকের মতো বঙ্গবন্ধুর পাল উঁচিয়ে সাত সমূদ্র তেরো নদী পেরিয়ে মঞ্চে সে আলোর বিচ্চুরণ ঘটেছিল ভূমধ্যসাগরের এপার হতে আটলান্টিকের ওপারে। কমার্শিয়াল ভেঞ্চার উতরে সেটিকে সিনেমায় রূপ দেয়ার পরিকল্পনাও করেছিলেন সাংস্কৃতিককর্মীদের কর্ণতূল্য পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়।
আবদুল গাফফার চৌধুরীর লেখা ‘পলাশী থেকে ধানমণ্ডি’ নাটকে শেখ মুজিবের চরিত্রে অভিনয় করার কারণে লন্ডন ও নিউ ইয়র্কে মৌলবাদীগোষ্ঠীর হামলারও শিকার হন তিনি। এরপরও দমে যাননি। বিভিন্ন সময়ে হত্যার হুমকি ও জঙ্গীদের শিরোচ্ছেদের ঘোষনা উপেক্ষা করে মাঠে তেপান্তরে পারঙ্গমতা দেখিয়েছেন কারুনাট্যকার পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ব্যাপারে বিশিষ্ট সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী একান্ত সাক্ষাতকারের লন্ডনের শো’ সম্পর্কে আমাকে বলেছিলেন সে ঘটনার আদ্যোপান্ত।
সাদামাটা কক্ষে পায়চারি করছেন শেখ মুজিব। দীপ্তিময় প্রক্ষেপন তাঁর অবয়ব জুড়ে। মঞ্চের হালকা আলো উতরে ঢিলাঢালা পাঞ্জাবি গোটাচ্ছেন জাতির জনক। পায়ের চটি, চশমা আর চুরুটের ভঙ্গিমায় পীযূষকে সেদিন সত্যি সত্যিই বাংলার মুজিব মনে হয়েছিল। তার চেয়েও বড় ব্যাপারটি হলো- অনেককেই সেধেছিলাম ‘পলাশী থেকে ধানমন্ডি’ নাটকে অভিনয় করতে। বেশিরভাগ লোকজনই গাঁইগুঁই করেছেন। অথচ পীযূষ ছেলেটা একবাক্যে রাজি হয়েছিল। তাঁর নৈর্বক্তিকতা আর বিশাল বুক চিতিয়ে বঙ্গবন্ধুকে নতুন করে দাঁড় করানোর প্রাণান্তকর চেষ্টা আমার হৃদয় ছুঁয়েছিল।
গাফফার চৌধুরী আরও বলেন, পীযূষ বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করাতে একটা সুবিধাও পেয়েছিলাম। কারণ বঙ্গবন্ধুর কথায় ফরিদপুরের যে আঞ্চলিকতা ছিল সেটা ও খুব ভালো করে তুলে ধরতে পেরেছিল। শেখ মুজিবের যে বিশিষ্টতা, কথার আন্তরিকতা, মিষ্টতা ও সারল্যপনা-ফরিদপুরের সন্তান হওয়াতে পীযূষ তাতে মুন্সিয়ানা দেখাতে সক্ষম হয়েছিল। এভাবে লন্ডনের বিভিন্ন অডিটরিয়াম ছাড়াও নিউ ইয়র্কের এ্যাস্টোরিয়া ও ব্রুকলিনে ‘পলাশী থেকে ধানমন্ডি’র অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়েছিল জনতা। সবচেয়ে মজার ব্যাপার ছিল—পূর্ব—লন্ডনে যখন এটার রিহার্সাল হতো তখন ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে অভিনয়ে অংশ নিতে আসতো বাঙালিরা। কতোটা বঙ্গবন্ধুপ্রেমী হলে দুঃসময়ে তারা জোটবদ্ধ হয়েছিল বিদেশ বিজনে—বলেন আবদুল গাফফার চৌধুরী।
পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন, গ্রাম থিয়েটার ও ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইন্সটিটিউটের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। খুব কাছ থেকে দেখেছেন নদী নালা খাল বিলের গ্রামীণ প্রকৃতি আর সরল সহজ মানুষ। নীল আকাশে ভেসে বেড়ানে সাদা মেঘের ভেলা যেমন তাঁর হৃদয়ের অন্তর্গহীনে তেমনি এদেশের রাজনীতির গতিপ্রকৃতিও তিনি বিশ্লেষণ করেন গভীর উপলব্ধী থেকে। সবুজ ঘাসের ডগায় জ্বলজ্বলে শিশিরবিন্দুতে তিনি যেমন মুগ্ধ হন, তেমনি শুভবুদ্ধির তারুণ্য তাঁকে আশাজানাগানিয়া করে তোলে প্রতিনিয়ত।
একসময় নিয়ম করে লিখেছেন ছড়া-কবিতা-গল্প ও উপন্যাস। ব্যস্ততর সময় সামলে এখন আর খুব একটা লেখা হয়ে ওঠে না। তাঁর বইয়ের সংখ্যা ১৮। পুরুদস্তর সংগঠক হিসেবেই ইদানীং তিনি সুপরিচিত। তবে মাঝেমধ্যে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তাঁর নিবন্ধ প্রকাশ হচ্ছে। ফুরসত মিললে এখনও গ্রিণ রুম হয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। যদি কি-না মনের মতো কাহিনী আর পরিচালক মেলাতে পারেন। যদিও বাংলাদেশ টেলিভিশনের ‘শাহেদ’ চরিত্রে অভিনয় করে আশির দশকেই পীযূষ হয়ে উঠেছিলেন আমজনতার নায়ক। এমনকি রাস্তাঘাটে তাঁকে শাহেদ নামেই অনেকে ডাকতে পছন্দ করতেন। শাহরিয়ার কবিরের উপন্যাস অবলম্বনে নাট্যজন নাসির উদ্দিন ইউসুফ পরিচালিত একাত্তরের যীশু চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি যে ভালোবাসা পেয়েছিলেন তা সমসাময়িক খুব কম শিল্পীর ভাগ্যেই জুটেছে।
জীবনের অনেকগুলো বছর পেরুনো পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও সাংস্কৃতিক নীলিমায় ভাস্বর এক সন্ধ্যাতারা। তাতে যেমন আলোর বিকিরণ আছে তেমনি রয়েছে সৌন্দর্যময় প্রতিভা। জয়তু পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়। শতায়ু হোন স্বমহিমায় - শুভ জন্মদিন ।
পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংক্ষিপ্ত জীবনকর্ম:
পিতার নাম : ননীগোপাল ব্যানার্জী
মাতার নাম : সান্ত্বনা ব্যানার্জী
জন্মতারিখ : ২৩ সেপ্টেম্বর ১৯৫০
স্থায়ী ঠিকানা : ফরিদ শাহ রোড, ঝিলটুলী, ফরিদপুর।
বর্তমান ঠিকানা : ফ্ল্যাট # সি-৫, বাসা # ১৬, রাস্তা #০৩, ডিওএইচএস, বনানী, ঢাকা-১২১৩
বিশেষ অভিজ্ঞতা :
• দৈনিক লাল সবুজ পত্রিকার প্রতিষ্টাতা নির্বাহী সম্পাদক (১৯৯০-১৯৯৪)
• বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (২০১২-২০১৪)
• একুশে টেলিভিশন এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (২০২০ থেকে অদ্যাবধি)
• সম্প্রীতি বাংলাদেশ- (অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং মানবিক বিশ্ব গড়ার প্রত্যয়ের সংগঠন) এর প্রতিষ্ঠাতা ও আহবায়ক ( ২০১৮ থেকে অদ্যাবধি)
অভিজ্ঞতা :
জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সংবাদ মাধ্যমে অসংখ্য কলাম লেখক । বাংলাদেশের সকল ইলেক্ট্রনিক্স মাধ্যমে ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং সমকালীন বিষয় ভিত্তিক টকশোতে নিয়মিত অংশগ্রহণ।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিষয় ভিত্তিক সেমিনারে সক্রিয় অংশগ্রহণ।
ভ্রমণ অভিজ্ঞতা: ভারত, চীন, নেপাল, থাইল্যান্ড,মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, কোরীয়া, সোভিয়েত ইউনিয়ন, মিশর, ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, বেলজিয়াম, প্রান্স, জার্মানী, অস্ট্রিয়া, ইউ.এস.এ, কানাডা, ইউ.এ.ই,ইতালী, সুইডেন, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড।
শিক্ষাগত যোগ্যতা :
ক্রমিক শিক্ষার স্তর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা
১. প্রাথমিক বিদ্যালয় এস.এম. মডেল হাই স্কুল, গোপালগঞ্জ
২. এস.এস.সি/ সমমান রাজবাড়ী মডেল হাই স্কুল (তৎকালীন নাম গোয়ালন্দ মডেল হাই স্কুল) (১৯৬৭ সাল)
৩. এইচ.এস.সি/ সমমান সরকারী রাজেন্দ্র কলেজ, ফরিদপুর (১৯৬৯ সাল)
৪. স্নাতক / সমমান সরকারী রাজেন্দ্র কলেজ, ফরিদপুর (১৯৭১/৭২ সাল)
৫. স্নাতকোত্তর/ সমমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় , গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ (১৯৭৪ সাল)
সামাজিক/ সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ:
ক্রমিক সংস্থার নাম ও ঠিকানা কার্যক্রম-সময়কাল মন্তব্য
১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটকের দল- নাট্যচক্র-এর সক্রিয় সদস্য অভিনয় ও সাংগঠনিক কার্যক্রম- ১৯৭২-৭৩
২. ঢাকা থিয়েটার নির্দেশনা, অভিনয় ও সাংগঠনিক কার্যক্রম
১৯৭৩ থেকে অদ্যাবধি প্রতিষ্ঠাতা সদস্য
৩. গ্রাম থিয়েটার উত্তরবঙ্গ ( রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ) এর দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠাতা সদস্য
৪. ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইন্সটিটিউট (আইটিআই) বাংলাদেশ কেন্দ্র এর প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য
৫. সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট প্রতিষ্ঠাকালীন স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য
৬. জাতীয় কবিতা পরিষদ ১ম নির্বাহী পরিষদের সদস্য
৭. আবৃত্তি শিল্পী সংঘ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রতিষ্ঠাতা
৮. অভিনয় শিল্পী সংঘ প্রতিষ্ঠাতা সদস্য
৯. ডিরেক্টরস গিল্ড প্রতিষ্ঠাতা সদস্য
১০. স্বল্পদৈর্ঘ চলচ্চিত্র -এ অভিনয় আগামী (মোরশেদুল ইসলামের পরিচালনায় বাংলাদেশের প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে মূখ্য ভূমিকায় অভিনয়) সূচনা, সে
১১. ডকুড্রামা তে অভিনয় আবদুল গাফফার চৌধুরী পরিচালিত ডকুড্রামা- পলাশী থেকে ধানমন্ডি-তে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু চরিত্রে অভিনয়।
১২. পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এ অভিনয় একাত্তরের যীশু, কিত্তনখোলা, আমার আছে জল, আমার বন্ধু রাশেদ, শিল্পী, আধিয়ার, মহামিলন, মৃত্তিকামায়া, গেরিলা, বুনোহাঁস, উত্তরের ক্ষেপ, মেঘলা আকাশ, আমি শুধু চেয়েছি তোমায়, বেঙ্গলী বিউটি
১৩. মঞ্চ নাটক এ অভিনয় দানব, মেসাকার, লেট দেয়ার বি লাইট, সম্রাট ও প্রতিদ্বন্দীগণ (নাট্যচক্র), শকুন্তলা, ফনিমনসা, কেরামত মঙ্গল, কিত্তনখোলা, মুনতাসীর ফ্যান্টাসী, বনপাংশুল, প্রাচ্য, নষ্টনীড়
১৪. ধারাবাহিক টেলিভিশন নাটক এ অভিনয় সকাল সন্ধ্যা, পূর্বরাত্রী পূর্বদিন, গ্রন্থিকগণ কহে,বাবা, ম্যাড ভাই, বিজলী মহল্লা, মিয়া ভাইয়ের বিচার, সৈয়দ বাড়ীর বউ, ক্ষত ও চাঁদ, লাল নীল বেগুণী, ক্ষনিকালয়, এক জনমে, বন্ধন, ক্ষুধিত পাষাণ, ঘরে বাইরে, জিন্দা কবর বাংলাদেশের প্রথম টেলিভিশন ধারাবহিক নাটক থেকে অদ্যবধি
১৫. টেলিভিশন নাটকে অভিনয় বিশ্বাস ঘাতকের মা, কনে দেখা, কৃষ্ণপক্ষ, যখন মোহনায় ভোর নামে, ঠিকানা ভুল ছিল, যাত্রা, একজন মিশার ঈদ, মেঘের ভেলা গর্ত, ভাঙ্গা পথের রাঙ্গা ধুলোয়, লঙ্কাকান্ড, তিরিশ বছর পরে, আপনাকে নিতে এসেছি স্যার, দৌড়, ফিরে আসা ৭১ (টেলিফিল্ম), শালবনে লাল আগুন (টেলিফিল্ম), জলছবি, উৎসব উৎসব, আরশীনগর, তখন শান্তা ঘুমায়, ক্ষত, ও চাঁদ, কব্বর।
১৬. মুক্ত নাটক, মঞ্চ নাটক, টিভি নাটক ও অন্যান্য অনুষ্ঠান এ নির্দেশনা বাসন (মুক্ত নাটক), মীনকন্যা (শিশু ও নারী পাচার প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরির জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনার নির্দেশক), ক্ষুদীরাম (নির্দেশক,সময় নাট্যদল), বান্দর ইন জ্যাকসন হাইটস (নির্দেশক,বাংলাদেশ থিয়েটার আমেরিকা), শিশুতোষ নাটক আমার পৃথিবী ( রচনা ও নির্দেশনা), রঙ্গীলা মানুষ ( ধারাবাহিক নাটক-রচনা ও নির্দেশনা), ১৯৭৩ সাল থেকে বাংলাদেশ বেতারের খবর পর্যালোচনামূলক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ, অতিথী প্রযোজক, নাট্যাভিনয় ও আবৃত্তি। বিটিভি তে আজকের সংবাদপত্র অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা,সামাজিক সাংষ্কৃতিক, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বিশিষ্টজনদের নিয়ে স্বাক্ষাতকারমূলক অনুষ্ঠান উপস্থাপনা, দেশ টিভিতে বিশিষ্টজনদের স্বাক্ষাতকার গ্রহণ অনুষ্ঠান।
নিয়মিত আবৃত্তি ও শ্রুতি নাটকের ক্যাসেট তৈরি হয়েছে।
১৭. সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে বিদেশ ভ্রমণ -যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাতে ফোবানা সম্মেলনে ৩ বার অংশ গ্রহণ।
-২০০৬ সনে জার্মানীর মিউনিখে-বাংলা-জার্মান সাংস্কৃতিক উৎসব-এ অংশগ্রহণ।
-২০০৪ সনে জার্মানীর বার্লিনে-আন্তর্জাতিক লোক উৎসব- এ বাংলাদেশ দলের দলনেতা হিসেবে অংশগ্রহণ।
-১৯৯৭ সনে যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্কে বর্তমান মহামান্য রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে-বঙ্গবন্ধু সম্মেলন-এ অংশগ্রহণ।
-কলকাতার হলদিয়াতে -আন্তর্জাতিক কবিতা উৎসবে অংশ গ্রহণ
-মিশরের কায়রোতে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের ১ম প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান।
-১৯৮৯ সনে উত্তর কোরিয়ার পিয়ং ইয়ং এ বিশ্ব ছাত্র যুব সম্মেলনে অংশগ্রহণ।
উল্লেখযোগ্য গবেষণা/ প্রবন্ধ/ বই প্রকাশনা:
ক্রমিক গবেষণা/ প্রবন্ধ/ বই প্রকাশনার শিরোনাম প্রকাশক/ জার্নালের নাম, প্রকাশনার স্থান ও বছর মন্তব্য
১. মোম জোছনায় জলতরঙ্গ (কবিতার বই ) অনন্যা - অমর একুশে বই মেলা-২০০৮
২. ম্যাজিক বাঁশী (ছড়ার বই ) পার্ল পাবলিকেশন- অমর একুশে বই মেলা-২০০৬
৩. ইটিং বিটিং (ছড়ার বই ) বটেশ্বর বর্ণন- অমর একুশে বই মেলা-২০১৬
৪. জীবনের বাঁকে বাঁকে (আত্নজীবনী) বিজয় প্রকাশ- অমর একুশে বই মেলা-২০০৭
৫. গ্রামের নামে নাম (গল্পগ্রন্থ/উপন্যাস) সন্ধানী প্রকাশণী- অমর একুশে বই মেলা-২০০৬
৬. মনপাপী (গল্পগ্রন্থ/উপন্যাস) মিজান পাবলিশার্স- অমর একুশে বই মেলা-২০০৯
৭. কমলা রঙের মেয়ে (গল্পগ্রন্থ/উপন্যাস) অনন্যা প্রকাশণী- অমর একুশে বই মেলা-২০০৮
৮. রঙিলা মানুষ (গল্পগ্রন্থ/উপন্যাস) নবরাগ প্রকাশণী- অমর একুশে বই মেলা-২০০৬
৯. বনকুমারী (গল্পগ্রন্থ/উপন্যাস) বিজয় প্রকাশ- অমর একুশে বই মেলা-২০০৬
১০. ছড়া No ছিটানো (ছড়ার বই) পার্ল পাবলিকেশন- অমর একুশে বই মেলা-২০০৮
১১. খাঁচা (গল্পগ্রন্থ/উপন্যাস) বিজয় প্রকাশ-অমর একুশে বই মেলা-২০০৬
১. Colorful People of Bangladesh সম্পাদনা-১৯৯৬ পাহাড়ে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের সামাজিক-সাংস্কৃতিক জীবন ধারা নিয়ে সচিত্র গ্রন্থ|
২. Election Monitoring সম্পাদনা-১৯৯৬ ১৯৯৬ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের সমীক্ষা, জরীপ, জাতীয়, রাজনৈতিক।
৩. বঙ্গমাতা, সতত প্রেরণাদায়ী সম্পাদনা -২০১৭
৪. উদ্দীপ্ত যৌবনের দূত শেখ কামাল- সম্পাদনা -২০১৭
৫. তিমির হনন এর নেত্রী সম্পাদনা ২০১৯
৬. একাত্তরের এর গণহত্যা ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি-সমন্বয়কারী ২০২০
সম্মাননা ও পুরস্কার :
ক্রমিক পুরস্কার/ সম্মাননা ও প্রাপ্তির সন পুরস্কার/সম্মাননার মন্তব্য (যদি থাকে)
১. সেলিম আল দীন লোকনাট্য পদক-২০২১
সংস্কৃতি চর্চায় বিশেষ অবদান ও সামাজিক কর্মকান্ডে নেতৃত্বের জন্য।
২. আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ পদক- ২০২০ আবৃত্তি শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য।
৩. বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ কতৃক -বিশুদ্ধানন্দ শান্তি স্বর্নপদক-২০১৯
সম্প্রীতি বাংলাদেশ এর আহবায়ক হিসেবে এবং আন্তধর্ম সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য।
৪. জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কতৃক ট্যাক্সকার্ড সম্মাননা-২০১৬ নিয়মিত ও অন্যতম রাজস্ব প্রদানকারী হিসেবে
৫. ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড কর্তৃক সম্মাননা-২০১৪ মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য।
৬. পদাতিক নাট্য সংসদ সম্মাননা সংস্কৃতি চর্চায় বিশেষ অবদান ও সামাজিক কর্মকান্ডে নেতৃত্বের জন্য।
৭. ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী সম্মাননা সংস্কৃতি চর্চায় বিশেষ অবদান ও সামাজিক কর্মকান্ডে নেতৃত্বের জন্য।
৮. স্বাধীনতার বিজয় স্মৃতি সম্মাননা সংস্কৃতি চর্চায় বিশেষ অবদান ও সামাজিক কর্মকান্ডে নেতৃত্বের জন্য।
৯. ঢাকা পদাতিক সম্মাননা সংস্কৃতি চর্চায় বিশেষ অবদান ও সামাজিক কর্মকান্ডে নেতৃত্বের জন্য।
১০. তারুন্যের উচ্ছাস আবৃত্তি পরিষদ এর সম্মাননা আবৃত্তি শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য।
১১. ইমম্প্রেস টেলিফিল্ম এওয়ার্ডস টেলিভিশন নাটকে অভিনয়ের জন্য
১২. যৈবতি কন্যার মন- নাটকে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেতার পুরস্কার মঞ্চে-যৈবতি কন্যার মন- নাটকে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেতার পুরস্কার
১৩. জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন পরিষদ সম্মাননা-১৯৯৭ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নে একজন অন্যতম নেতা হিসেবে।
রাজনৈতিক জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলি:
- ৬২-র শিক্ষা আন্দোলনের মাধ্যমে কিশোর বয়সেই রাজনীতির মাঠে পদার্পন-১৯৬২
- ৬ দফা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ-১৯৬৬
- বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি-১৯৬৭
- ৬৯-র গণঅভূত্থানে সক্রিয় অংশগ্রহণ-১৯৬৯
- মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ-১৯৭১
- বাংলাদেশ যুব ঐক্য এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি-১৯৮৫
- যুবসংগ্রাম পরিষদের নেতা
- সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট এর প্রতিষ্ঠাকালীন স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য
- সম্প্রীতি বাংলাদেশ (অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং মানবিক বিশ্ব গড়ার প্রত্যয়ের সংগঠন) এর প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক। প্রতিষ্ঠার সাল-২০১৮
শখ : ভ্রমণ, বইপড়া, সিনেমা দেখা, গান শোনা।
———————————————————-
লেখক ও তথ্য সংগ্রাহক - প্রধান বার্তা সম্পাদক, একুশে টেলিভিশন
শু:স:/জ:নি:
পাঠকের মন্তব্য