সংযোগ খবর - রাজনীতি । জাতীয় নির্বাচন,২০২৩
“অক্টোবর মাসেই জাতীয় নির্বাচনের পরিস্থিতির চূড়ান্ত মেরুকরণ হয়ে উঠতে পারে। এ কারণেই সবাই যার যার অবস্থান থেকে কথা বলছেন। বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যাচ্ছে, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে তারা আরও জোরালো আন্দোলন গড়ে তুলতে চান, যাতে সরকারকে একটি সমাধানে আসতে বাধ্য করা যায়। কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে তাদের যে রোডমার্চ রয়েছে, সেখান থেকেই সেই আন্দোলনের ঘোষণা আসতে পারে। বিশেষ করে ঢাকা অভিমুখে রোডমার্চ, জনসভা, অবরোধ কর্মসূচি তাদের বিবেচনায় রয়েছে। যুগপৎ আন্দোলনে থাকা অন্য দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দলটি। বিএনপির নেতারা মনে করেন, অতীতে তাদের আন্দোলনে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দমন অভিযান থাকলেও, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার ইস্যুর কারণে এবার তাদের সেরকম কোন কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে না।
আবার বিএনপির আন্দোলনে কোনরকম অভিযান চালানো হলে বা চাপ প্রয়োগ করা হলেও সেটাকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে নিজেদের নির্যাতিত হিসাবে তুলে ধরার সুযোগ তৈরি করে দেবে তাদের। ফলে তফসিল ঘোষণার আগেই নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য জোরালো আন্দোলন গড়ে তুলতে চায় বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিবিসি বাংলাকে বলেন, “অক্টোবর মাস বলে কথা নয়, বাংলাদেশের মানুষ তো আর একদিনও অপেক্ষা করতে রাজি নয়। মানুষের ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে গেছে। আমরা সেভাবেই জনগণকে সাথে নিয়ে এগোচ্ছি।”
তিনি মনে করেন তাদের আন্দোলনে এর মধ্যেই গতি সঞ্চার হয়ে গেছে। তবে আন্দোলনের সফলতা সম্পর্কে তার মন্তব্য হচ্ছে, “কবে (আন্দোলন) সফল হবে, সেটার তো আর দিনক্ষণ বলা যাবে না। আন্দোলনের গতি ক্রমান্বয়ে বাড়তেই থাকবে, আন্দোলনের নিয়মই তো তাই,” তিনি বলেন। সেপ্টেম্বর মাসে বিবিসি বাংলাকে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে বিএনপির সিনিয়র নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছিলেন, কোন ধরণের আক্রমণাত্মক পথে না গিয়ে একের পর একে কর্মসূচির মাধ্যমে তারাও একই পরিস্থিতি তৈরি করবেন দাবি আদায়ের জন্য, যাতে করে তার ভাষায় ‘সরকার গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রশ্নে সমঝোতায় বাধ্য হয়’। তিনি তখন বলেছিলেন, “যে কোন সময়, যে কোন স্থানে বসে মানুষকে নিষ্পেষণের যেসব নার্ভ সরকারের হয়ে কাজ করে সেগুলোকে অচল করে দিবো আমরা। সরকারকে দাবি মানতে হবে।”
সামনের দিনে বিএনপির কর্মসূচির মধ্যে ঢাকা ঘেরাও, সচিবালয় ঘেরাও, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাওসহ নানা ধরণের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন বিবিসি বাংলাকে বলেন, “তফসিল ঘোষণার আগেই যা করার বিএনপিকে করতে হবে। এই একমাস বিএনপির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তারা কীভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবে, এরপর নির্বাচনে আসবে নাকি আসবে না, দাবি আদায় না হলে কী করবে, সব কিছুই এই মাসেই পরিষ্কার করতে হবে কারন নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, বিএনপির আন্দোলন ঠেকাতে রাজনৈতিকভাবে অবস্থান নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও। গত কয়েক মাসে বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচীর বিপরীতে আওয়ামী লীগকেও পাল্টা কর্মসূচী দিতে দেখা গেছে। ক্ষমতাসীন দলটির নেতারা পরিষ্কারভাবেই বলে দিয়েছেন, বিরোধী দলের আন্দোলন তারা রাজনৈতিকভাবেই মোকাবেলা করবেন।
সংযোগ সূত্র- বিবিসি বাংলা/প্র:০১-১০-২০২৩/১০৮/রা:স:/জ:নি:
পাঠকের মন্তব্য