সংযোগ খবর । অপরাধ (মির্জা ফখরুল)
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তার দেখানোর পর আদালতে হাজির করা হয়েছে। রোববার রাত ৮টা ১০ মিনিটে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হয়। এর আগে আটকের প্রায় সাড়ে ৯ ঘণ্টা পর মির্জা ফখরুলকে গ্রেপ্তার দেখায় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের প্রধান উপকমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন জানান, বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার অভিযোগে রাজধানীর রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় মির্জা ফখরুলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
আটক দেখানোর পর আজ রাতেই মির্জা ফখরুলকে আদালতে নেওয়া হয়। রাত ৭টা ৪২ মিনিটে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয় থেকে বিএনপি মহাসচিবকে নিয়ে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের উদ্দেশে রওনা হয় পুলিশ। এর আগে রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গুলশানের বাসা থেকে মির্জা ফখরুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি)।
বিশ্ব গণমাধ্যমে বিএনপি মহাসচিবের গ্রেপ্তারের খবর :
বিএনপির মহাসমাবেশে সহিংসতা, বহু হতাহত এবং দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গ্রেপ্তারের খবর গুরুত্ব পেয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। এতে বিরোধী দলের ওপর সরকারের ‘দমনপীড়ন’ এবং গত সংসদ নির্বাচনে অনিয়মের প্রসঙ্গও উঠে এসেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবির মধ্যে বাংলাদেশের সরকারবিরোধী আন্দোলন সহিংস রূপ ধারণ করেছে। বার্তাসংস্থাটি শনিবার বিএনপির মহাসমাবেশ চলার সময় এক পুলিশ সদস্য নিহত ও কয়েকশ মানুষ আহত হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছে।
ভারতের এনডিটিভি মির্জা ফখরুলকে আটক করার বিষয়টিকে শিরোনাম করে আজ রোববার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গতকাল বিএনপির সমাবেশ সহিংস রূপ ধারণ এবং এই সহিংসতায় বিএনপির এক নেতা ও পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেও প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল এনডিটিভি।
‘সহিংস সরকারবিরোধী আন্দোলনের পর বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা আটক’ শিরোনামে খবর প্রকাশ করেছে ইন্ডিয়া টুডে। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন বিএনপির মহাসমাবেশ এবং সেটি পণ্ড করে দিতে পুলিশের কাঁদুনে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছে।
ভয়েস অব আমেরিকা রোববার তাদের প্রতিবেদনের শিরোনামে বলেছে, ‘বাংলাদেশে সহিংসতা, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি হাজার হাজার মানুষের।’ সংবাদমাধ্যমটি তাদের প্রতিবেদনে শনিবারের মহাসম্মেলন পণ্ড করে দিতে পুলিশের কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছে। এছাড়া রাজনৈতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে যে গভীর বিভক্তি রয়েছে, সে বিষয়টি এর মাধ্যমে ওঠে এসেছে বলে জানিয়েছে গণমাধ্যমটি।
ওয়াশিংটন পোস্টের শিরোনাম ছিল, ‘সাধারণ নির্বাচনের আগে উত্তপ্ত পরিস্থিতি, পুলিশের সঙ্গে বাংলাদেশের বিরোধীদলের সমর্থকদের সংঘর্ষ।’
জার্মানির ডয়েচ ভেলের শিরোনাম ছিল, ‘সহিংস রূপ নিল বাংলাদেশের সরকারবিরোধী আন্দোলন।’ সংবাদমাদ্যমটি বলেছে, আন্দোলনকারীরা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে। সহিংসতার ঘটনায় অনেক মানুষ আহত হওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে তাদের প্রতিবেদনে।
আলজাজিরা প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সরকারবিরোধী সমাবেশের পর বাংলাদেশের বিরোধী দলীয় নেতা (মির্জা ফখরুল ইসলাম) আলমগীর আটক।’ তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। এরমধ্যে প্রধান বিরোধী দলীয় নেতাকে আটক করা হয়েছে। এতে বলা হয়, মির্জা ফখরুলের আটকের ঘটনা বাংলাদেশের বিরোধীদের বিরুদ্ধে দমনপীড়নের অংশ।
শতাধিক বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বিএনপির দীর্ঘদিনের নেত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে কার্যত গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার এক লাখেরও বেশি সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারী ঢাকার রাস্তায় নেমেছিল। এটা ছিল এ বছরের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ।
সংযোগ সূত্র- দৈনিক সমকাল/প্র:২৯/১০/২০২৩/অ:স:বি:/জ:নি:
পাঠকের মন্তব্য