অপরাধ সংযোগ / জনসংযোগ.কম / ২১-০৩-২০২০
। এম আনিছুর রহমান ।
প্রশ্নবিদ্ধ যুবমহিলা লীগ ? নাকি পাপিয়া ? নাকি স্বয়ং আওয়ামী লীগ?
যুবমহিলা লীগ কি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর কিছু নয় ? তাহলে দায় শুধুই যুব মহিলা লীগ এর কেন হয় ? বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এরও কেন নয় ? যুবমহিলা লীগ বা যুব লীগের অর্জন যদি আওয়ামী লীগ এর মাথার মুকুট হয় তবে তাদের এতটুকু ব্যর্থতায় আওয়ামী লীগ এর মাথা ব্যাথা কেন নয় ? যদি পাপিয়ার কারনে যুবমহিলা লীগ এর শীর্ষ্ নেতৃত্ব বহিস্কার হয় বা প্রশ্নবিদ্ধ হয় বা হেয় প্রতিপন্ন হয় তাহলে ধরেই নেয়া যায় গত ১৬ বছরের দ্বৈত হাতে তিল তিল করে গড়ে উঠা এই সংগঠনের জন্য তাদের সকল পরিশ্রমই বৃথা হল মনে হয়, মনপ্রাণ দিয়ে আওয়ামী লীগ করলেই কি এমন হয় ?। সরকার বাঁচাবেন ? নাকি দল ? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিনম্রচিত্তে এই প্রশ্ন ? আশাকরি তিনি দুটোই বাঁচাবেন, কিন্তু কিভাবে ? সরকার প্রধানের মহিয়সী উদ্যোগে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার আজ বিশ্ব দরবারে যতটুকু নন্দিত, ত্যাগীদের বিসর্জন দিয়ে দলে হাইব্রীড ও তেলবাজদের প্রশ্রয় দিয়ে নিজ দেশ সহ বিশ্ব দরবারে দল আজ ততটুকুই নিন্দিত, এ কথা ইদানীং বার বার প্রমাণিত । তাই সর্বাগ্নে প্রয়োজন তেলবাজ ও হাইব্রীড নিধন অভিযান । মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্য এই অভিযানই হোক একমাত্র শুদ্ধি অভিযান । “ ত্যাগী কর্মীরা অভিমানী হয় কিন্তু বেঈমান হয়না ’’ এই একটি স্বান্তনার বাণী দিয়ে তাদেরকে দাবিয়ে না রেখে বরং আদর করে অভিমানীদের ডেকে এনে যথার্থ মূল্যায়ন করা উচিৎ নয়ত প্রতিবছরই ঘরে ঘরে নতুন নতুন ফ্রন্ট সৃষ্টি হবে ।
আওয়ামী লীগ যদি এখন দল না হয়ে বরং অনুভূতি হয়ে থাকে তবে দলীয় প্রধানের এগুলো অনুধাবন করার এখনই উপযুক্ত সময় । অন্তত একদিন না একদিন দল ত বিরুধী দলে যাবেই, একটি দল ত আর চীরকাল ক্ষমতায় থাকবেনা, তখন এই ত্যাগী কর্মীরাই যুদ্ধের মাঠে লগি বৈঠা ধরবে, কোন হাইব্রীড বা তেলবাজরা ধারেকাছেও থাকবেনা বরং তারা নিজেদের বাঁচাতে গিয়ে ওদের আরও স্পাই হয়ে যাবে । তাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কে চীরঞ্জীব ও শ্বাশত করতে চাইলে ত্যাগী কর্মীদের যথার্থ মূল্যায়ন করা অতীব জরুরী হয়ে দারিয়েছে।বিশেষ করে সাবেক ছাত্রলীগকে যথার্থ অর্থে মূল্যায়ন করে পূণ:জাগরণ করা এখন সময়ের দাবী মাত্র । কিছু ভূলত্রুটির জন্য সমগ্র অর্জন কখনও বৃথা যেতে পারেনা । যুব মহিলা লীগের শীর্ষ নেতৃত্বে তথা সভানেত্রী হিসেবে যিনি আছেন, আমরা তার সমগ্র রাজনৈতিক জীবনের ত্যাগ সম্মদ্ধে সম্পূর্ণ অবগত । যদি এই মূহুর্তে তিনি সামান্যতম হেয় প্রতিপন্ন হন তবে ত্যাগী কর্মীদের মাঝে আরও হতাশা নেমে আসবে ।
শেষকথা হচ্ছে – মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন – আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যখন অপরাধীদের ধরে সামনে আনেন তখন কেন ব্যবস্থা নেয়া হয় ? আগে থেকেই নয় কেন ? একথার পরিপ্রেক্ষিতে বলতেই হয়, যে সবসময় আগে থেকেই সবকিছু বুঝা যায়না, যদি তাই বুঝা যেত তাহলে খন্দকার মুশতাক সৃষ্টি হতনা, হয়ত বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে এভাবে আমাদেরকে হারাতে হতনা । তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ তারা করেছেন, গ্রেফতার করে সামনে এনেছেন, দলীয় প্রধান তৎক্ষণাৎ পাপিয়াকে দলীয় পদবী থেকে বহিষ্কার করেছেন এবং অতি ভদ্রতার সহিত তিনি এ বিষয়ে দ্বায়ও স্বীকার করেছেন । এখানেই যুব মহিলা লীগ এর সৌর্য্ ফুটে উঠেছে । এভাবে অন্য কোন সংগঠনের অপরাধীদের ব্যপারে শীর্ষ নেতৃত্বের দ্বায় স্বীকার করতে খুব কমই দেখা যায় ।এবার আইন অনুযায়ী পাপিয়ার সাজা নিশ্চিত । পাপিয়াকে ছাড় দেয়া হয়েছে কি কোথাও ? যে দলেরই হোক অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিতকরণই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেত্রীর প্রধান অঙ্গিকার, প্রতিনিয়তই তা বাস্তবায়িত হচ্ছে, এবং হবেই।তাই বলে কোন অপরাধীই জন্মাবেনা, অপরাধীরা ঘাপটি মেরে থাকবেনা, তাকি হয় কখনও ? অপরাধীরা কখনও নির্মূল হয়না, ধরন পাল্টায় মাত্র । সবাই এমনভাবে কথা বলছেন যেন পাপিয়ারা শুধু যুব মহিলা লীগেই আছেন, আর কোথাও নেই । পাপিয়া বলুন আর খন্দকার মোশ্তাক-ই বলুন তারা যুগে যুগে থাকবেই, ধরণ পাল্টাবে মাত্র । খন্দকার মোশ্তাকরা-ত পেছন দিক দিয়ে ছুড়ি মেরেছেন আর বর্তমান ফ্রন্ট নেতারা-ত সামনে দিয়েই ছুড়ি মারছেন । কথা একটাই- তারা থাকবেই এবং যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ধরন পাল্টাবে মাত্র ।
ফ্রন্টে যোগদানকারী আওয়ামী বেইমানদের জন্য দায়ী কে ? কে পদত্যাগ করবেন তাদের মত অমানুষ তৈরির জন্য ? তাদেরকে আগে থেকেই সনাক্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করে অঙ্কুরেই দল থেকে বহিষ্কার করা হলনা কেন ? কারণ- আগে থেকেই বুঝা যায়নি, তাই । যখন বুঝা গেছে তখন তারা বহিষ্কৃত হয়েছে । এটাই রূঢ় বাস্তবতা । তাই যখন তখন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের বহিষ্কার নয় বা হেয় প্রতিপন্নের চেষ্টা নয়, কারণ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অর্জন ও পালন করণ কোন সহজ কথা নয়, যুক্তিসংঘত ক্লু ব্যতিত এইসকল পদবীকে হেয় করা উচিৎ কার্য নহে বরং ত্যাগ ও দলের প্রতি আনুগত্য ও ভালবাসা বিবেচনা করে আন্তরিক আলোচনার মাধ্যমে তাদেরকে শোধরানোর সুযোগ দেয়া উচিৎ নয়ত ত্যাগ ও আবেগ দুটোই একদিন সম্পূর্ণ হারিয়ে যাবে, থাকবে শুধু গোপীবাইন ও বাঘাবাইন ।
jsongjugnews@gmail.com
fb.com- @jshongjog
পাঠকের মন্তব্য