বেশি মেরেছেন অনিক, সকাল, রবিন ও জীয়ন’বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় আজ বুধবার আরও একজন শিক্ষার্থী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে মামলার ৪২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হলো। কাল বৃহস্পতিবার মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করেছেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১–এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান।
বুধবার আদালতে সাক্ষ্য দেন তাজওয়ার বখতিয়ার জাহিদ। তিনি বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ২০০৭ নম্বর কক্ষে থাকতেন।
তাজওয়ার বখতিয়ার আদালতকে বলেন, গত বছরের ৬ অক্টোবর রাত ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে তিনি হলের শৌচাগারে যান। তখন ২০১১ নম্বর কক্ষে অনেকগুলো স্যান্ডেল দেখতে পান। পরে তিনি তাঁর কক্ষে আসেন। এরপর মানিব্যাগ নিয়ে তিনি ক্যানটিনে খাবার আনতে যান।। এরপর রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে অনিক সরকারকে (আসামি) ২০১১ নম্বর কক্ষ থেকে ২০১২ নম্বর কক্ষে যেতে দেখেন। অনিকের সঙ্গে আরও কয়েকজন ছিলেন। তখন মোরশেদ অমর্ত্য ইসলাম (আসামি) তাঁদের কক্ষে আসেন। তিনি জিজ্ঞাসা করেন, ২০১১ নম্বর কক্ষে কী হচ্ছে? প্রথমে মোরশেদ অমর্ত্য ইসলাম কিছু বলতে চাননি। পরে তিনি বলেন, ২০১১ নম্বর কক্ষে শিবির সন্দেহে একজনকে ধরা হয়েছে। পরে তিনি রাফসান রেদওয়ান আহনাফকে সঙ্গে নিয়ে নাশতা খেতে হলের বাইরে যান। রাত ২টার দিকে হলে ফিরে আসেন। তখন ২০০৭ নম্বর কক্ষে গিয়ে মোরশেদ অমর্ত্য ইসলামকে দেখতে পান। জিজ্ঞাসা করলে মোরশেদ অমর্ত্য ইসলাম তাঁকে জানান, ১৭তম ব্যাচের ছাত্র আবরার ফাহাদকে অনিক সরকার, রবিনসহ অনেকেই পিটিয়েছেন। বেশি মেরেছেন অনিক, সকাল, রবিন ও জীয়ন। হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ২২ আসামিকে গতকাল কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। এই হত্যা মামলায় বিচারিক আদালত পরিবর্তন চেয়ে ১৬ আসামির আবেদন উত্থাপিত হয়নি বলে ২১ ডিসেম্বর খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় করা মামলায় গত বছরের ১৩ নভেম্বর বুয়েটের ২৫ ছাত্রের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২১ জানুয়ারি অভিযোগপত্রটি আমলে নেন আদালত। ২ সেপ্টেম্বর বুয়েটের ২৫ ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত ৩ আসামি পলাতক।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করছেন আবু আবদুল্লাহ ভূঁইয়া, আব্দুস সোবহান তরফদার, প্রশান্ত কুমার কর্মকার, মিজানুর রহমান, আলমগীর হোসেন, শহিদুল ইসলাম ও মশিউর রহমান। আসামিপক্ষে আছেন মাহাবুব আহমেদ, আমিনুল গণী, গাজী জিল্লুর রহমান, আজিজুর রহমান, ফারুক আহমেদ প্রমুখ।
পাঠকের মন্তব্য