মন্তব্য প্রতিবেদন ডেস্ক / জনসংযোগ.কম / ১৯-০৫২০২০
। এম এ কাদির খান ।
ম্যান মেক এ কান্ট্রি গড মেক এ ভিলেজ। ছেলে বেলায় পড়েছি। এক কিলোমিটারের পথ। মস্ত বড় থলে নয়, রুটিন মাফিক বই নিয়ে স্কুলে পৌঁছেছি। টিফিন টাইম নয়, নামাজের ব্রেকে নামাজ পড়ে বিশাল মাঠে খেলাধুলায় মত্ত থেকে সময়টা পার করেছি। যথাসময়ে আবার ক্লাসে গিয়েছি। ছুটির ঘন্টার মধুর শব্দমালা হৃদয়কে আপ্লূত করেছে, ভয়ংকর এক মজা নিয়ে বাড়ির দিকে দে ছুট! কিছু খেয়েছি অথবা খাইনি, মৌসুমী খেলায় মনানন্দে সময় চলে গেছে। কী মধুমাখা দিনের এক মহাকাব্যিক সময় পার করেছি।
স্কুলের বেতন ছিল অতি নগন্য। দরদ ছিল অনার্থিক। এক হিসেবে দেখেছি প্রাইমারি, উচ্চ বিদ্যালয়, একাদশ, দ্বাদশ, অনার্স এবং মাস্টার্সের সম্মিলিত একাডেমিক খরচ বর্তমান একটি শিশুর শুরুর আগের শুরুর মাসিক খরচের কম।
প্রকৃতি। নিটোল এক অলঙ্কারের মূর্ছনার নাম। এখানে ছন্দের স্কেলটা ওঠানামা করে। অতিবৃষ্টি অনাবৃষ্টি, প্রকৃতির দু’টি তাল ও লয়ের নাম। অতিবৃষ্টি এবং অনাবৃষ্টির সাথে মানুষ, পশুপাখি, গাছপালা, কীটপতঙ্গের জীবিকার একটি হিসেব থাকে। এই দুটি শব্দ জীবনের আয়ুষ্কাল পাল্টে দেয়।
ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, ফাঙ্গাস। এই নামগুলো জীববিজ্ঞানে পড়েছি। এগুলোর পজিটিভ নেগেটিভ প্রভাব জীবনে আছে। সুস্বাদু মুখরোচক অনেক খাবার ব্যাকটেরিয়ার সহানুভূতি ছাড়া আমরা তৈরি করতে পারিনা। আবার অনেক মজাদার লোভনীয় খাবারগুলো ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, ফাঙ্গাসের আক্রমণে নষ্ট হয়ে যায়।
এক অতিকায় ছোট্ট অনুজীব ভাইরাস। আমাদের জীবনটা ছারখার করে দিচ্ছে। আমরা তার নাম দিয়েছি করোনা ভাইরাস। প্রজেক্টের নাম কোভিড-১৯.
কেনো এমন ছন্দপতন! আল্লার গজব! আল্লাহর উপহার! বিষয়টি কে কীভাবে নিবে, তা তাঁদের বিষয়। কেউ চীনকে দায়ী করছে। কেউ রাশিয়াকে। একশ্রেণির বকধার্মিক করছেন ইহুদি খৃষ্টান বৌদ্ধদের। আমি দায়ী করছি আমাকে। আমি প্রকৃতিকে রক্ষা করতে পারিনি।অহেতুক, কারণে অকারণে প্রকৃতির ওপর স্টিম রুলার চালিয়েছি আমরা।
চৈত্র মাস পার করে বৈশাখ মাস পার করতে চলেছি। কী স্নিগ্ধ মনোরম আবহাওয়া। বাসায় এসি চালিয়ে অনেকে ঘুমাতে পারতেন না। এখন পাতলা কাঁথা লাগে। শেষ রাতে শীতল অনুভূতি ঘুমের মাত্রাটা বাড়িয়ে তোলে।
ভয়ে বা আতঙ্কে অথবা ফ্যামিলির চাপে বাসা হতে বের হতে পারিনি। সামাজিক দায়বদ্ধতা নিয়ে বের হই, দায় মোচনের চেষ্টা করি। জননেত্রী, বিশ্ব মানবতার জননীর ত্রাণকাজে অংশ নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে ঘুরতে প্রকৃতির স্বকীয়তা দেখি। মানুষের অভাব দেখি।
কী সতেজতা! মায়াবী গাছপালা চারদিক! বাতাসে কার্বনের গন্ধ নেই। বুকভরে নিশ্বাস নেই। অপরিমেয় তৃপ্তি। বৈশ্বিক প্রশান্তি!
ক্ষুদার্ত মানুষের হাহাকার। দায়ী আমি। দায়ী আমরা।
jsongjugnews@gmail.com
fb.com - @jshongjog
পাঠকের মন্তব্য