বিশেষ সাক্ষাৎকার / জনসংযোগ নিউজ / ০৬-০৪-২০২০
বিশেষ সাক্ষাৎকার প্রদানে- এম মোহিদ আলী (মিঠু), প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি- যুক্তরাজ্য শেফিল্ড আওয়ামী লীগ এবং সদস্য, কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কমিটি,বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, যুক্তরাজ্য শাখা ।
গ্রহণে- এম. আনিছুর রহমান, সম্পাদক - জনসংযোগ নিউজ ।
বিশ্বব্যপী মরণঘাতক করোনা ভাইরাসের প্রভাবে বাংলাদেশ সহ পুরো বিশ্বেই এখন সময়টা মহাক্রান্তিকালের, আভ্যন্তরীন রাজনৈতিক বা পরস্পর রেশারেশীর নয়, এক আল্লাহর পর এ ব্যাপারে এখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনার উপড় ভরসা রাখা ও তার প্রতিটি নির্দেশ মেনে তাকে আন্তরিক সহযোগীতা করার সময়, নিজেকে সুরক্ষীত রাখা এবং পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও যেন সুরক্ষিত থাকেন, এই মর্মে মহান আল্লাহপাকের নিকট সকলের দোয়া করার সময়, বিশ্বনেত্রীর সাথে পুরো বিশ্বই আছে, তাই আতঙ্কগ্রস্থ না হয়ে বরং মনোবল শক্ত রাখার সময়, সরাসরি কাঁধে কাধ বা হাতে হাত মেলাতে না পারলেও আত্নার সাথে আত্না মিলিয়ে এই মহামারিকে অবিলম্বে জয় করার সময়, । জনসংযোগ.কম এর সাথে একান্ত টেলিকন্ফারেন্সের মাধ্যমে করোনা মোকাবেলায় নিজ জন্মভূমি প্রিয় বাংলাদেশ সম্পর্কে এভাবেই নিজ অভিব্যক্তি তুলে ধরেন ইউকে প্রবাসী বাংলাদেশী বংশ্দুত জনাব মোহিদ আলী মিঠু । তিনি বর্তমানে যুক্তরাজ্য শেফিল্ড আওয়ামী লীগ এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ,যুক্তরাজ্য শাখার কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন । সম্প্রতি করোনা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তিনি বাংলাদেশে অবস্থান করছেন এবং চৌদ্দ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন শেষে জনসংযোগ.কমের সাথে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গত ০৪-০৪-২০২০ তারিখে একান্ত সাক্ষাৎকার প্রদান করেন । সাক্ষাৎকারটি জনসংযোগ.কম পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল -
আনিছুর রহমান- আপনার কাছে আমার প্রথম প্রশ্নটিই হলো, আপনি লন্ডন নাথেকে এই মূহুর্তে দেশে কেন চলে এলেন, করোনার ভয়ে ?
মোহিদ আলী মিঠু- একদমই নয়, আমি একটু সময় নিয়েই বাংলাদেশে এসেছিলাম করোনা বিষয়ে একটি ইতিবাচক বার্তা নিয়ে । বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এখনও কোন ভেকসিনকে করোনা মোকাবেলায় শতভাগ সার্টিফাইড করেনি কিন্তু কোরিয়ান একটি ভেকসিন রেপিট টেষ্ট এর ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে সারা বিশ্বে দ্রুত করোনা টেষ্ট ও চিকিৎসায় খুবই কার্যকরী দেখা দিচ্ছে ।বিশ্বের প্রায় সব দেশই এই রেপিট টেষ্টটি ব্যবহৃত হচ্ছে এবং সুফলও মিলছে । আপনি লক্ষ করবেন বর্তমানে করোনা আক্রান্তদের মাঝ থেকে মৃত্যুর চেয়ে সুস্থতার হার অনেক বেড়ে গেছে । আমি সেই ভেকসিনটির ব্যাপারে কোরিয়ার সেই মেডিসিন কম্পানির সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর দেশে এসে প্রথমেই মাননীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রীর সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলি এবং তিনি এ বিষয় নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাথে আলোচনা করে আমার সাথে পরবর্তীতে এ নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন । এরই মধ্যে দেশ ও বিশ্ব লকডাউন হয়ে যাওয়ায় আমি আর লন্ডন যেতে পারিনি ।
আনিছুর রহমান - কিন্তু প্রবাসীরাই মূলত এই দেশে এসে এই ভাইরাসটি ছড়িয়েছে, তাদের নিজ নিজ অবস্থানকৃত দেশেই যে যেভাবে ছিল সেভাবেই অবস্থান করাটাই যৌক্তিক ছিল, এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কি ?
মোহিদ আলী মিঠু- দেখুন প্রথমে চীন-এ এই ভাইরাস এর মহামারি হওয়ার পর প্রতিটিা দেশেই কিন্তু প্রাবাসে অবস্থানকারীরাই নিজ নিজ দেশে ফিরে বা ব্যবসায়িক ও ব্যক্তিগত প্রয়োজনে আসা যাওয়া করেই এই ভাইরাস বিশ্বব্যাপী ছড়িয়েছে । বাংলাদেশেও একই ব্যাপার ঘটেছে । এখন আমরা প্রবাসে থাকি বলে কি আমাদেরকে আপনারা দেশে আসতে বাধা দেবেন ? এমনকি যদি দেশের মাটিতে মৃত্যু বরণ করে চীরনিদ্রায় সায়িত হতে চাই সেক্ষেত্রেও ?
আনিছুর রহমান - বিষয়টি আবেগতারিত হয়ে যাচ্ছে, আসলে আমি বলতে চাচ্ছি, যখন ঝাঁকে ঝাঁকে প্রবাসীরা রেড এলার্ট দেশগুলো থেকে দেশে ফিরে এলো তখন তাদের মধ্যে বেশীরভাগই হোম কোয়ারেন্টাইন না মেনে এলোমেলো ঘুরাঘুরি করেছে এবং ভাইরাসটি বহন করে এনে দেশে দ্রুত ছড়িয়ে দিয়েছে, স্থানীয় নাগরিকরা এই বিষয়টিকে ভালভাবে দেখেনি, এজন্য নিজেদেরই স্বজন হওয়া স্বত্তেও প্রবাসীরা বর্তমানে এই দেশের নাগরিকদের কছে একটু নেতীবাচক দৃষ্টিতেই আছে, মূলত এই বিষয়ে আপনি কি বলবেন ?
মোহিদ আলী মিঠু- এ বিষয়ে আমি একমত, কাজটা ঠিক হয়নি, সরকারের নির্দেশনা মেনে চলা তাদের উচিৎ ছিল এবং এখনও মেনে চলাই উচিৎ । এই কয়েকদিনে দেখেছি নিজ দেশে এসে প্রবাসীরা, সেই রেমিটেন্স যোদ্ধারা কেমন যেন নিজ দেশে নিজ স্বজনদের কাছেই একরকম ভিলেন হয়ে গেছে । পরিবারের আপনজনও কেউ কাউকে ঘরে জায়গা দিচ্ছেনা, অন্যত্র বাসাভাড়া নিয়ে বা সরকারী ব্যবস্থাপনায় থাকতে হচ্ছে, প্রবাসীদের ঘরে ঘরে রেড সিগন্যাল দিয়ে দেয়া হচ্ছে, দলবল নিয়ে তাদের এ্যটাক করে ধরে আনা হচ্ছে, কোন কোন জায়গায় প্রহৃত হতে হয়েছে তাদেরকে । জানিনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দেশের প্রতি রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের মানসিকতা কোনদিকে মোর নিবে ! আমি শুধু এখন এই মুহুর্তে বলতে চাই এখন এসব রেশারেশীর সময় নয় । বিশ্ব লকডাউন হওয়ার পূর্বেই যে যেখানে নিরাপদ মনে করেছে, সে সেখানেই চলে গেছে । এ দেশকেও প্রবাসীরা নিরাপদ মাতৃকোল ভেবেই নিজ গৃহে ফিরে এসেছে, এভাবেই ভাবতে হবে । দেশের এমন কোন দুর্যেোগ নেই, এমন কোন বৃহৎ কর্মসূচী নেই যেগুলোতে প্রবাসীদের ভূমিকা নেই, কিন্তু করোনা উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে দেশে ফিরে প্রবাসীরা এমন কিছু কষ্ট পেয়েছে তা বলে বুঝানো যাবেনা । যারা দেশে চলে এসেছেন তারা এসে উপলব্ধি করেছেন যে তারা ভুল করেছেন, আর আরও যারা আসতে চেয়েছিলেন তারা এসব দেখে,শুনে,বুঝে আর আসেননি নিজ দেশে, কেমন আছেন তারা সেখানে ? আদৌ কি জানেন কিছু আপনারা ? যাক,এই মূহুর্তে এই বিষয় নিয়ে আমি এর চেয়ে বেশী কিছু বলতে চাচ্ছিনা, এ ব্যাপারে বলব কিছু কথা অবশ্যই, তবে এখন নয়, মহামারি শেষ হলে, অবশ্য যদি বেঁচে থাকি ।
আনিছুর রহমান - আপনি ত লক ডাউন থেকেই আছেন দেশে, সব দেখে কি মনে হচ্ছে আপনার, আমরা কোন দিকে যাচ্ছি আসলে ?
মোহিদ আলী মিঠু- শুরুটা খুবই ভাল ছিল বাট এখন এই মূহুর্তে লকডাউন ভেঙ্গে অনেকেই বাহিরে চলে আসতে চাইছে, গতকালকে গার্মেন্টস কর্মীদের বিশাল ঢল দেখলাম । বিষয়টি মোটেও ভাল লক্ষণ নয় , ধৈর্য ধরতে হবে, নিজেকে ভালবাসতে শিখতে হবে, যারা এসব করছেন তারা আসলে নিজেদেরকেই নিজেরা ভালবাসেননা , এখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কি করবে ? বরং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং ত্রাণদাতা ও ত্রাণগ্রহীতারাই সবচেয়ে করোনা ঝুঁকিতে আছে । আমার সাফ কথা - মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে চলুন, সবাই শুধু আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হউন । মহামারি চলাকালীন ও মহামারি পরবর্তী সকল দায় দায়িত্ব পালনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কোন সমস্যা হবেনা, বিশ্বের সকল নেতৃবৃন্দই তার সাথে ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন । আমি জানি অভাব/প্রয়োজন কখনও আইন মানেনা, তবুও এরই মাঝে নিজেকে রক্ষা করতে হবে , আর একেই যুদ্ধ বলে । মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এই যুদ্ধে আমাদের সেনাপতি, আর আমরা সবাই তার সৈনিক । তাই যুদ্ধ ক্ষেত্রে কোন সৈনিক যেন সেনাপতির চেয়ে বেশী না বুঝেন, এটাই আমার প্রত্যাশা, আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুক, আমিন । আপনাকে ধন্যবাদ ।
আনিছুর রহমান - আপনাকেও ধন্যবাদ ।
Fb- prnews1.com.bd
Email- desk@prnews1.com / সা:স:বি:/জ:নি:
পাঠকের মন্তব্য