মন্তব্য প্রতিবেদন / জনসংযোগ.কম / ২৭-০৩-২০২০
। আবু সাইদ কায়সার দিপু ।
সারা দুনিয়ায় আজ করোনা ভাইরাস নামক মরণঘাতী আতংক ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী, দুনিয়ার এ প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্ত পর্যন্ত আজ ছড়িয়ে ছিটিয়ে বেড়াচ্ছে এই প্রানঘাতি অভিশপ্ত জীবাণু, বৈজ্ঞানিক ভাষায় এর নাম নোভেল করোনা ভাইরাস। এই মহামারির আশঙ্কা সারা বিশ্বের সাথে আজ আমাদের দেশেও পরিলক্ষিত হচ্ছে । এর থেকে মুক্তির লক্ষে দেশের সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহ সকল মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন । মহান রাব্বুল-আল-আমিন নিশ্চয়ই এর সুফল আমাদেরকে উপহার দিবেন । তারই অংশ হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গত দুই দিন আগে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে সারাদেশের মানুষের খাদ্যের নিরাপত্তা সহ চিকিৎসা সেবার সার্বিক দিক তুলে ধরেছেন । সেখানে একটি বিষয় লক্ষ্য করা গেল পোষাক শিল্পের শ্রমিকদের বেতন ভাতা পরিশোধ করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কে ৫০০০/= (পাঁচ হাজার কোটি টাকা) প্রণোদনা বরাদ্দ দিতে হয়। রাষ্টের এই ক্লান্তিলগ্নে এ সকল শিল্প কারখানার মালিকগণ এ সময়ে সরকারের পাশে দাঁড়াবে তাদের সারা জীবনের অর্জিত অর্থ
সাহায্য নিয়ে বরং তা না করে ভিক্ষুকের দলেরা উল্টো দল বেঁধে সকলে মিলে গেল মাননীয় প্রধামন্ত্রীর নিকট অর্থ সাহায্য নিতে, তাদের কারখানার শ্রমিকদের বেতন ভাতা পরিশোধের টাকা নিতে।এটা বিশ্ব দুর্যোগ কিন্তু তাদের আচরণে মনে হচ্ছে এর জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীই দায়ী, তিনিই বানিয়েছেন এই ভাইরাস, তিনিই মহামারিতে পড়েছেন আর কেউ পড়েনি, তাই তিনি ভর্তুকি দিতে বাধ্য । আমার মনে হয় এসব কথিত শিল্পপতিদের চেয়ে দেশের হতদরিদ্র দিনমজুদেরও ব্যক্তিত্বের দাপট অসাধারণ কারণ তারা এখনও ভিক্ষার বাটি নিয়ে গণভবনে ভীড় করেনি । মাত্র একটি মাস চলতে পারলেননা আপনারা ? এগুলো সহ আরও অনেক আচরণ দেখে আমার কেন যেন মনে হচ্ছে, করোনাকে কেন্দ্র করে একটি মহল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূর্বলতার সুযোগ নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে, যা করার কথা আমার বাংলার ভিক্ষুকদের, দিনমজুরদের, হতদরিদ্রদের বরং উল্টো তা করছে দেশের কথিত শিল্পপতিরা । আমি এই বিষয়টির তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি । আমি আজ থেকে দেশের দিনমজুরদেরকেই মনে করব দেশের শিল্পপতি আর এসব কথিত শিল্পপতিদেরকে বলব নগ্ন দিনমজুর, এ আমার প্রতিবাদ । প্রশ্ন থাকে যে, সকল শ্রমজীবী মানুষগুলো মাথার ঘাম পায়ে ফেলে সারা বছর নিরলস পরিশ্রম করে রপ্তানি পন্য সরবরাহ করে কোটি কোটি টাকা আয় করার কাজে নিয়োজিত থাকে আর কারখানার মন দরিদ্র মালিকগুলো বিত্তবান হয়ে উঠে । তারা সারা বছরের ইনকাম দিয়ে কেন তাদের নিজ নিজ কারখানার শ্রমিকদের অন্তত এক মাসের বেতন ভাতা পরিশোধ করতে পারবে না ? প্রশ্ন থাকবে তা হলে ওরা যে ব্যবসায় লাভ করে এ টাকা যায় কোথায় ? দেশের এই সংকট মূহুর্তে তারা কি ভূমিকা রাখলো এ দেশের মানুষের জন্যে ? শুধু টাকা কামিয়ে নিলো ঐ শ্রমজীবী মানুষদের ঘাড়ে চেঁপে, আর দূর্যোগ দেখা দিলেই সরকার প্রধান মমতাময়ী শেখ হাসিনার কাছে সাহায্যের জন্য দল বেঁধে যায় প্রণোদনা বরাদ্দের জন্য । কই ! বিশ্বব্যাপী এই দূর্যোগ মোকাবেলায় তাদের আজ থাকার কথা সরকারের পাশে সাহায্য নিয়ে , অন্তত তাদের কারখানার শ্রমিকদের এক মাসের ছুটি দিয়ে খাবার বেতন ভাতা পরিশোধ করে, তা না করে শিল্পপতি নামক ঐ রাঘব বোয়ালরা আজ ভিক্ষার বাটি নিয়ে যায় গণবভনে । ঈদ আসলেও ওরা যায় সাহায্যের জন্যে শ্রমিকদের বেতন দিতে পারে না, শ্রমিকের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করতে পারে না, যদি সরকার প্রধান ওদের জরুরী ফান্ডের ব্যবস্থা না করে দেয়। এই হল আমাদের হতদরিদ্র অর্থ লোভী পোষাক শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকগণের প্রকৃত চেহারা ।
তারপরও বলি মহান আল্লাহ্ পাক রাব্বুল-আল-আমিন যেন ওদের হেদায়াত করেন, আমিন।
লেখক - সাবেক ছাত্রনেতা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী
jsongjugnews@gmail.com
fb.com- @jshongjog
পাঠকের মন্তব্য