দৃষ্টি আকর্ষন-জাতীয় / জনসংযোগ.কম / ২৭-০৪-২০২০
। এম আনিছুর রহমান ।
জাতীয় কল্যাণ ও অকল্যাণ উভয় পিঠেই যার অবস্থান তার নাম ডা: জাফরউল্লাহ । তার সর্বশেষ সংযোজন- যুক্তফ্রন্ট এ যোগদান ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অবস্থান । অথচ বঙ্গবন্ধু নিজ হাতে তাকে গড়ে দিয়েছিলেন মানব কল্যাণের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিতে । মুক্তিযুদ্ধের সময় অন্তত যোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবায় তার অবদান উল্লেখযোগ্য । গত জাতীয় নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের হয়ে তার প্রতিটি কর্মকান্ডই ছিল রাষ্ট্রদ্রোহীতার সামিল । তাই ডা: জাফরউল্লাহর আবেদন আকুতি, মিনতি, চাল-চলন, কথাবার্তা, কোনটাই ফরমাল নয়, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য হতেও পারে আবার নাও হতে পারে । মোটকথা তার প্রতি বিশ্বাস নেই আমাদের । তবে তার হাতে দেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানের মহারত্নটি রয়েছে । তার নাম ড. বিজন শীল । ড. বিজন শীলকে যারা সঠিকভাবে চিনেননা তাদের সাথে অযথা তর্ক করে মূল্যবান সময় নষ্ট করার কোন যৌক্তিকতা নেই । বিশেষকরে যেকোন ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য ড. শীল বাংলার একমাত্র বিখ্যাত যোদ্ধা, বাকী প্রায় সবই তা তা থৈ থৈ । উনি চাইলে আরও বহু আগে দেশ ছেড়ে আমেরিকা, জাপান, চীন বা ইরানে চলে যেতে পারতেন এবং তাদের দেশের হয়ে আজকে জগৎ বিখ্যাতও হতে পারতেন কিন্তু তার একান্ত দেশপ্রেম তাকে তা করতে দেয়নি । বাংলাদেশের এমন বহু চিকিৎসা বিজ্ঞানী আছেন যাদেরকে এই দেশ মূল্যায়ন করতে পারেনি কিন্তু বিশ্ব ঠিকই মূল্যায়ন করেছে । সবসময় who এর আশায় বসে থাকতে হবে ? আমাদের দেশে মিরাক্কেল ঘটানোর মত কি কেউ নেই ? আছে, তার নাম ড. বিজন শীল । সরকার যদি তাকে ডা: জাফরউল্লাহর দিক দিয়ে বিবেচনা না করে শুধুমাত্র জাতীয় কল্যাণের কথা চিন্তা করে তাহলে অতিস্বত্তর ড. বিজন শীলকে সম্মানের সহিত গুরুত্ব দেয়া উচিত । সারা গিলবার্ডের অতীত ইতিহাস যেমন বলে তিনি অবশ্যই বিজয়ী হবেন ঠিক তেমনি ড. বিজন শীলের অতীত ইতিহাসও বলে তিনিও বিজয়ী হবেন, বাকীটা উপড়ওয়ালা জানেন । র্যাপিড টেষ্ট, এন্টিবডি টেষ্টের কোরিয়ান ফর্মুলা নিয়ে নিজে থেকেই যুক্তরাজ্য শেফিল্ড আওয়ামী লীগ এর সভাপতি জনাব মোহিদ আলী মিঠু আরও দুমাস আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রীকে অবগত করেছিলেন, নিজ খরচে সমস্ত প্রযুক্তিও তিনি এনেছিলেন কিন্তু মাননীয় মন্ত্রী এব্যাপারে কোন গুরুত্বই দেননি । জনসংযোগের সাথে একান্ত স্বাক্ষাৎকারে তিনি একথা জানিয়েছেন। এবার ড. শীল তা দেশে বসেই উদ্ভাবন করলেন কিন্তু এখনও সেই একই মানোভাব লক্ষ করা যাচ্ছে সংশ্লিষ্টদের মাঝে । র্যাপিড টেষ্ট, এন্টিবডি টেষ্টের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টদের এখনও দৃঢ় অবস্থান লক্ষ করা যাচ্ছে, কিন্তু কেন ?
N-95 মাস্ক ও পিপিইর বিষয়টি সম্পর্কে আমরা যা বুঝার বুঝেছি তবে র্যাপিড/এন্টিবডি টেষ্টের ব্যাপারে মাত্র বুঝতে শুরু করেছি, । অল্প একটু যা বুঝেছি তাতে মনে হচ্ছে ড.শীল এর এই কিট টেষ্টে সফল হলে অল্প সময়ে আর অল্প খরচে দ্রুত প্রচুর পরিমাণে টেষ্ট করা যাবে । এমন অনেকেই আছেন তারা জানতেই পারেনি কখন তাদের বডিতে করোনা ডুকেছে আবার কখন এমনি এমনি এন্টিবডি তৈরীর ফলে অটোমেটিক ভাল হয়ে গেছে । এন্টিবডি টেষ্টের মাধ্যমে জানা যাবে কোন সুস্থ বডিতেও ইতিপূর্বে করোনা ডুকেছিল কিনা । মোটকথা যতদ্রুত রোগী সনাক্ত হবে ততদ্রুত তা কন্ট্রোল করা যাবে । ড. বিজন শীল এর উদ্ভাবনী এন্টিজেন/এন্টিবডি কিট অন্তত পরীক্ষা করে দেখা দরকার বিষয়টি আসলে কি ? তার আগেই তাকে বয়কট এর স্বিদ্ধান্ত কেন ? এমন হলে ত কোন বিজ্ঞানীই আর গবেষনা করবেনা । বিশেষ প্রশ্ন হচ্ছে- ড. শীলের কিট আসল না নকল এই পরীক্ষাটা করবে দেশের কোন বিজ্ঞানী ? তাকে ত অবশ্যই ড. বিজন শীল এর চেয়েও বড় বিজ্ঞানী হতে হবে, তাই নয় কি ? তাই ড. শীলকে সম্মানের সহিত সরাসরি লাইভ টিভি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের সামনে তার এই উদ্ভাবন প্রেজেন্টেশনের সুযোগ দেয়া হোক ।এই সুযোগপ্রাপ্তি যেকোন বিজ্ঞানীর রাষ্ট্রীয় অধিকার । আমরাও সরাসরি দেখতে চাই বিষয়টি । ছন্দহীন হেল্থ ডিজি যা বলবে শুধু তাই শুনতে হবে এমনত কোন কথা নেই । তিনি ইতিমধ্যে মাস্ক ও পিপিই নিয়ে অসমন্বয়ের মাধ্যমে ফ্রন্টলাইন যোদ্ধাদের মানসিক শক্তিকেই দূর্বল করে দিয়েছেন । হেল্থ ডিজি বলছেন- জেএমআই গ্রুপ ভুল বশত N-95 মাস্কের জায়গায় অন্য মাস্ক দিয়ে দিয়েছে আবার জেএমআই গ্রুপ এমডি বলছেন, সরকার N-95 মাস্কের কোন অর্ডারই দেয়নি । হেল্থ ডিজি সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে বুঝাচ্ছেন N-95 মাস্কের কোন চালানই বর্তমানে নেই অথচ দেশী বিদেশ অনেক নির্ভরযোগ্য মাধ্যমই এই মাস্ক সরকারকে সাপ্লাই দিতে চাচ্ছে কিন্তু ডিজি হেল্থ এসব বিষয়ে উদাসীন নাকি নিজেকে কোথাও বিক্রি করে রেখেছেন ঠিক বুঝেও বুঝা যাচ্ছেনা । অন্ধকার গোহা থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রী দেখে দেখে পড়েও ভুলভাল বলে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত । ঠিক যখনি ড. ফ্লোরা মেম এর বক্তব্যের উপড় গণমাধ্যমকর্মী সহ সকল মানুষের একটি আস্থা চলে এসেছে,ঠিক তখনি তাকে বাদ দিয়ে বর্তমানে আইইডিসিআর-এ চলছে প্রতিদিনের ব্রিফিং নামের শ্যুটিং । প্রতিটি চিকিৎসালয়েই নাজুক অবস্থা বিরাজমান । অথচ প্রধানমন্ত্রীকে বলা হচ্ছে সবই ঠিক আছে, নো প্রোবলেম ইন বাংলাদেশ । তাই আমরাও সাধারন মানুষ যদি সুফল পাই তাহলে ড. বিজন শীলের কিট দ্বারাই পরীক্ষা করাতে দল বেঁধে ছুটব । এই দেশে বহু বড় বড় মেডিকেল ডা:/বিশেষজ্ঞ আছেন কিন্তু দেশে কোন ফরমাল মেডিকেল সিষ্টেম নেই, সমন্বয় নেই । স্বাস্থ্য সেবাটি স্বাস্থ্য ব্যবসায় পরিণত হয়েছে, শুধুমাত্র এই একটি কারনে সবকিছু থাকা স্বত্বেও বাঙ্গালী চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তিতে অসহায় ও নির্যাতিত, আর এজন্যই বর্তমানে ধনী/গরীব সবাই ছুটে ভারতে বা উন্নত দেশে । প্রধানমন্ত্রীকে বার বার ভুলভাল বুঝানো আর এই মহাদুর্যোগ মুহুর্তেও কমিশন বাণিজ্যের ইতি টানা দরকার । আগে দরকার দেশকে নিরাপদ করা । তারপর লকডাউন একসময় ভাঙ্গবেই আর সব সাংবাদিক একসাথে করোনায় মারাও যাবেনা । তাই সংশ্লিষ্ট মহোদয়গণের উদ্যেশ্যে বলছি, খালি মাঠে হয়ত আর বেশীদিন গোল দিতে পারবেননা ; হয়ত আরমাত্র কিছুদিন- এরপর এসব ব্যাপারে সবাই ছেড়ে দিলেও সাংবাদিকরা কিন্তু আপনাদের ছাড়বেনা ।
সঠিক রহস্য উদঘাটনের অনুসন্ধানে রয়েছে জনসংযোগ ।শীঘ্রই এসকল বিষয়ে জনসংযোগ নিয়ে আসছে একটি ব্যাতিক্রমী “ পোষ্টমর্টেম রিপোর্ট “ । অপেক্ষায় থাকুন । ধন্যবাদ ।
একনজরে ড. বিজন শীল -
———————————-
৯০-এর দশকে বিজ্ঞানী বিজন শীল ব্ল্যাকবেঙ্গল প্রজাতির ছাগলের সংক্রামক রোগের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেন। ২০০২ সালে তিনি ডেঙ্গুর কুইক টেস্ট পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। ২০০৩ সালে তিনি সার্সের কুইক টেস্ট পদ্ধতি আবিষ্কার করেন যা করোনা ভাইরাস এর পূর্বসূরী। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় সার্স প্রতিরোধে যে ক’জন বড় ভূমিকা রেখেছেন, ড. বিজন শীল তাদের একজন। সার্স প্রতিরোধ তিনি সিঙ্গাপুর সরকারের বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৯৯ সালে ছাগলের মড়ক ঠেকানোর জন্য তিনি পিপিআর এবং আফলা টক্সিন এর প্রতিশেধকও দেশীয় পদ্ধতিতে আবিষ্কার করে প্রান্তিক খামারীদের আশার মুখ দেখিয়েছেন। অণুজীববিজ্ঞান নিয়ে ১৪টি উদ্ভাবনের পেটেন্ট রয়েছে বিজন কুমার শীলের নামে।
jsongjugnews@gmail.com
fb.com- @jshongjog
পাঠকের মন্তব্য