গণমাধ্যম সংযোগ/সূত্র- তৃতীয় মাত্রা,চ্যানেল আই/পর্ব-৬৩৮৮/প্রচার-২৭জানুয়ারি,২০২১
।এম আনিছুর রহমান ।
[১] প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাকশালের নেতা ছিলেন, তিনি বাকশালের সদস্য হওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুর কাছে কোরআন শরীফ নিয়ে বলেছিলেন যে আমায় বিশ্বাস করেন। সদ্য প্রচারিত চ্যানেল আইয়ের তৃতীয় মাত্রা অনুষ্ঠানের ৬৩৮৮ পর্বে যুবমহিলা লীগ সভানেত্রী এ কথা বলেন। তিনি আরও জানান বাকশাল ছিল আওয়ামী লীগ এর একটি কর্মসূচী মাত্র। জিল্লুর রহমানের উপস্থাপনায় এ পর্বে আরও উপস্থিত ছিলেন জি-9 এর সাধারণ সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্থ। নাজমা আক্তারের এ মন্তব্যের জবাবে ডা. সায়ন্থ বলেন- তখন এক দলীয় শাসন কায়েম করে ভয় ভীতি দেখিয়ে মানুষকে বাধ্য করা হত বলেই হয়ত জিয়াউর রহমান সাহেবও তখন বাধ্য হয়েছিলেন এ কাজ করতে।
[২] মূলত তৃতীয় মাত্রার এই পর্ব টি ছিল চট্রগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে। নির্বাচন বিষয়ক বিভিন্ন আলোচনা ও সমালোচনায় ঘুরে ফিরে ভোটারদের উপস্থিতির স্বল্পতার বিষয়টিই প্রাধান্য পায়। ডা. সায়ন্থের মতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতার জোরে ও এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করে পূঁণরায় বাকশাল কায়েম করতেই নির্বাচনকে প্রহসনে রুপ দিয়েছে। নির্বাচন চলাকালীন বিএনপির এজেন্টদের থাকতে দেওয়া হয়না কারণ ভোট কারচুপি করে ক্ষমতায় পূণর্বহাল হওয়া ও লুটপাট করাই আওয়ামী লীগের প্রধান লক্ষ। এ সময় তিনি মির্জা কাদের, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, প্রয়াত মইনুদ্দীন খান বাদল সহ আরও অনেকের বিভিন্ন আওয়ামী লীগ বিরুধী বক্তব্যের কথা তুলে ধরে বলেন- আওয়ামী লীগকে ত এখন তার নিজের দলের নেতারা ও শরীকরাই দোষারুপ করছে এবং নানান দূর্ণীতির কীর্তি ফাঁস করে দিচ্ছে। জবাবে নাজমা আক্তার বলেন আজ পর্যন্ত কোন বিএনপি এজেন্ট কিন্তু বলেনি; যে তাদেরকে কেন্দ্রে থাকতে দেয়া হয়না, এটা বিএনপির উর্ধ্বতন নেতাদের দায় সারা বক্তব্য মাত্র। যদি কোন নির্বাচন প্রসঙ্গে তাদের কোন অভিযোগ থাকে তাহলে ঘরে বসে স্থুল কারচুপির কথিত অভিযোগ না করে আদালতের স্বরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ প্রদান করেন তিনি। তিনি আরও বলেন বিএনপির ফর্মুলাই হচ্ছে যেন-তেন উপায়ে ক্ষমতা দখল করা এবং ভোটে জিতলেও কারচুপি আবার না জিতলেও কারচুপির অভিযোগ করা।
[৩] তিনি হাওয়া ভবন সহ কর্ণেল ওলি, মেজর জেনারেল ইব্রাহীম, মওদুদ আহমেদ, ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা সহ আরও অনেক বিএনপির জেষ্ঠ নেতাদের বিএনপি বিরুধী বক্তব্যের কথা ডা. সায়ন্থকে স্বরণ করিয়ে দেন সে সময়। জবাবে ডা. সায়ন্থ বলেন- এতই যদি অভিযোগ বিএনপির বিরুদ্ধে হয় তবে বেগম জিয়াকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাষ্টের মামলা দিয়ে (যে টাকা এখনও ব্যাংকে গচ্ছিত আছে) আটকে রাখত হল কেন ? আর কোন ইস্যু ছিলনা ? উত্তরে নাজমা আক্তার জানান- আওয়ামী লীগ কখনই মামলা হামলায় বিশ্বাস করেনা। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্তও বেগম জিয়াকে কোন মামলাই দেওয়া হয়নি। যে সকল মামলায় বেগম জিয়ার সাজা হয়েছে সেগুলোর প্রতিটিই বিএনপি দ্বারাই গঠিত সেই কথিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দেয়া মামলা।
[৪] ২১শে আগষ্টের গ্রেণেড হামলা সহ সারাদেশে নির্মম জঙ্গী তৎপরতা চালানো, দেশব্যপী সিরিজ বোমা হামলা, এমনকি গাড়ী ও মানুষ পোড়ানোর মত জগণ্য কাজের হুকুম-দাত্রী হওয়া স্বত্তেও কোন মামলা না দিয়ে অধ্যবধি বেগম জিয়ার প্রতি যে সমবেদনা আওয়ামী লীগ দেখিয়েছে সেগুলো তার মনে রাখা উচিত চিরকাল। শুধু তাই নয় করোনাকালীন লক ডাউনের সময় নতুন আইন তৈরি করে বিশেষ ক্ষমতা বলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাকে জামিনে মুক্তি দিয়েছেন যা এই দেশের ইতিহাসের পাতায় প্রথম কোন ঘটনা অথচ সেই নেত্রীর মুখপাত্ররাই বর্তমানে করোনা চিকিৎসা ও ভ্যাকসিন বিষয়ে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে শুধুমাত্র ক্ষমতার লোভের বশবর্তী হয়ে, বৈশ্বিক মহামারিকেই ইস্যু বানিয়ে । সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার আর কি কোন ইস্যু নেই ? এভাবেই ডা. সায়ন্থর প্রশ্নের বিপরীতে দ্বিধাহীন পাল্টা প্রশ্ন ছুরে দেন নাজমা আক্তার ।
[৫] করোনা ভ্যাকসিন প্রদান ও ক্রয় প্রসঙ্গে ডা. সায়ন্থ ক্রমাগত দুর্নীতির প্রসঙ্গ তুলেন। তিনি বেসরকারী খাতে বেক্সিমকো ফার্মার করোনা ভ্যাকসিন ক্রয় বিক্রয়ের বিষয়টি রিজেন্ট গ্রুপের সাথে তুলনা করে সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন। এ সময় তিনি নির্বাচন কমিশন ও চলমান স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন ব্যার্থতা ও দূর্ণীতির চিত্র তুলে ধরেন এবং ভ্যাকসিন দেওয়ার নাম করে ট্রায়ালের মাধ্যমে বাঙ্গালীকে গিনিপিগ বানানো হচ্ছে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন। ডা. সায়ন্থের এ সকল অভিযোগ ও আশঙ্কাকে ভিত্তিহীন বলে দাবী করেন নাজমা আক্তার।
জন:প্র:/২৮জানুয়ারী,২০২১
jsongjugnews@gmail.com / fb.com- @jshongjog
পাঠকের মন্তব্য