ভবনের ছাদে উৎসব আয়োজনে নিষেধাজ্ঞাসহ থার্টি ফার্স্ট বা ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপনের ক্ষেত্রে ১৩ দফা নির্দেশনা জারি করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।
পটকাবাজি, আতশবাজি, বেপরোয়া গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালানোসহ যেকোনো ধরনের অশোভন আচরণ ও বেআইনি কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিএমপি ১৩ দফা নির্দেশনাসহ এ অনুরোধ জানায়। ডিএমপি বলেছে, ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপনের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির যেকোনো ধরনের আশঙ্কা রোধকল্পে ঢাকা মহানগর পুলিশ বদ্ধপরিকর। নির্দেশনা পালন না করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইংরেজি নববর্ষের প্রাক্কালে ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখ রাতে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে নির্ধারিত অনুষ্ঠান পালিত হবে। তবে সরকারের নির্দেশনা অনুসারে উন্মুক্ত জায়গায় কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, উৎসব উদ্যাপনের নামে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি নিজস্ব সংস্কৃতি, মূল্যবোধ ও ঐতিহ্যবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হন। কিছু ব্যক্তি আনন্দের আতিশয্যে পটকাবাজি, আতশবাজি, অশোভন আচরণ, বেপরোয়া গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালানোর মাধ্যমে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা, দুর্ঘটনা ঘটিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটান।
ঢাকা মহানগরীতে নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার স্বার্থে যে নির্দেশনাগুলো দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো ঢাকা মহানগরের সার্বিক নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে রাস্তার মোড়, ফ্লাইওভার, রাস্তায়, ভবনের ছাদে ও প্রকাশ্য স্থানে কোনো ধরনের জমায়েত–সমাবেশ বা উৎসব করা যাবে না। খোলা জায়গায় নববর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান বা সমবেত হওয়া যাবে না, এমনকি নাচ, গান ও কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না। আতশবাজি বা পটকা ফোটানো যাবে না কোথাও।
এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সন্ধ্যা ছয়টার পর বহিরাগত কোনো ব্যক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় বসবাসরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের গাড়ি নির্ধারিত সময়ের পর পরিচয় দিয়ে শাহবাগ ক্রসিং দিয়ে ঢুকতে হবে। তবে পরিচয় দিয়ে নীলক্ষেত ক্রসিং দিয়ে পায়ে হেঁটে ঢোকা যাবে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়।
গুলশান ও বনানী এলাকায় রাত আটটার পর বহিরাগত ব্যকিরা প্রবেশ করতে পারবে না। তবে ওই সব এলাকায় বসবাসরত নাগরিকেরা নির্ধারিত সময়ের পর কামাল আতার্তুক অ্যাভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) এবং মহাখালী আমতলী ক্রসিং দিয়ে পরিচয় দিয়ে ঢুকতে পারবে। গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় বসবাসরত নাগরিকদের রাত আটটার মধ্যে নিজ নিজ এলাকায় ফিরে আসার জন্য পুলিশ অনুরোধ করেছে।
সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় যেসব নাগরিক বসবাস করে না, তাদের ওই সব এলাকায় যাওয়ার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।
হাতিরঝিলে অবস্থান নিষিদ্ধ করা হয়েছে রাত আটটার পর। থার্টি ফার্স্টে সন্ধ্যা ছয়টার পর ঢাকা মহানগরীর কোনো বার খোলা রাখা যাবে না। ফাস্ট ফুডের দোকান বন্ধ থাকবে রাত আটটা থেকে। তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সীমিত আকারে আবাসিক হোটেলগুলোতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠান হবে। কিন্তু কোনো ক্রমেই ডিজে পার্টি করতে দেওয়া যাবে না।
ডিএমপি ইংরেজি নববর্ষের প্রাক্কালে ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি ২০২১ তারিখ ভোর ৬টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রেস্তোরাঁ, জনসমাবেশ ও উৎসবস্থলে সব ধরনের লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র বহন না করার অনুরোধ জানিয়েছে।