সংযোগ খবর/লাইফষ্টাইল-জনসংযোগ নিউজ/সূত্র- বাংলাদেশ প্রতিদিন
। অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু ।
আজ ১৯ মার্চ, বিশ্ব ঘুম দিবস। প্রতি বছর মার্চ মাসের তৃতীয় শুক্রবার দিবসটি পালিত হয়। ২০০৮ সালে প্রথমবার দিবসটি পালন করে ‘ওয়ার্ল্ড অ্যাসোসিয়েশন অব স্লিপ মেডিসিন’ এর ওয়ার্ল্ড স্লিপ ডে কমিটি। ঘুমের অভাবে শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির বিষয়ে মানুষকে জানানোই ছিল এই কমিটির মূল উদ্দেশ্য।
বিশ্ব ঘুম দিবস মূলত ওয়ার্ল্ড অ্যাসোসিয়েশন অব স্লিপ মেডিসিনের অর্থায়নে অনুষ্ঠিত বার্ষিক ইভেন্ট। এ বছর এই দিবসের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো, ‘নিয়মিত ঘুম : স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ভবিষ্যৎ’।
আমাদের মধ্যে অনেকের মধ্যে নিদ্রাহীনতা রয়েছে। ভালো ঘুম হয় না। আর ঠিকমতো ঘুম না হওয়ার কারণে দেখা দিচ্ছে নানা রোগ ও জটিলতা।
স্লিপ অ্যাপনিয়ার চিকিৎসা নির্ভর করে এর প্রকার ও তীব্রতার ওপর। (অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া ও সেন্ট্রাল স্লিপ অ্যাপনিয়া আক্রমণের ওপর নির্ভর করে) মনে রাখবেন সেন্ট্রাল স্লিপ অ্যাপনিয়া ব্রেন বা মস্তিষ্কের কারণে হয়। এর মূল কারণ সাধারণত হার্ট ফেইলিওর, লিভার ফেইলিওর এবং এ ধরনের অ্যাপনিয়ার চিকিৎসার মানে ওই সব রোগের চিকিৎসা করা। তার আগে অভ্যাসগত জীবনযাত্রার কিছু দিক পরিবর্তন করতে হবে। যেমন : শোয়ার স্টাইল পরিবর্তন করতে হবে। কারণ, চিত হয়ে শুয়ে থাকলে স্লিপ অ্যাপনিয়া বাড়ে। সে জন্য একপাশে কাত হয়ে শোয়ার অভ্যাস করুন এবং যদি সাইনাস বা ফুসফুসের ফ্লেমের কারণে নাক বন্ধ থাকে তাহলে যেদিক দিয়ে বন্ধ থাকে তার বিপরীত দিকে কাত হয়ে শোয়া ভালো। বালিশ দিয়ে ঘুমালেও খুব বেশি নরম বা ফোম জাতীয় তুলার বালিশ দিয়ে না শোয়া ভালো এবং বুকে জড়িয়ে ধরার বালিশ ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে-শোয়ার বালিশ চার ইঞ্চি উঁচু থাকা ভালো। ওজন কমানোর চেষ্টা করেন বা মেদ ভুঁড়ি বেশি থাকলে তা নিয়ন্ত্রিত করার চেষ্টা করুন-(মনে রাখবেন শরীরের ১০ ভাগ ওজন কমাতে পারলে ২৫ ভাগ স্লিপ অ্যাপনিয়া এমনিতেই কমে যায়)। এ ছাড়া অ্যালকোহল, ধূমপান, অতিরিক্ত চা-কফি পান থেকে বিরত থাকুন ও ঘুমের ওষুধ সেবন এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। টনসিলের প্রদাহ থাকলে তা যাতে রাতের বেলায় একটু স্থিতি হয়ে থাকে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করুন (বেশির ভাগ টনসিলের প্রদাহ রাতের বেলায়ই বেশি প্রদাহ বাড়ে, সেজন্য হালকা গরম পানিতে লবণ দিয়ে কুলকুচি করতে পারেন)। নিয়মিত ব্যায়াম : নিয়মিত ব্যায়ামের মধ্যে হাঁটা, সাঁতারকাটা এবং সাইকেল চালানোই সবচেয়ে ভালো ব্যায়াম। সেই সঙ্গে স্লিপ অ্যাপনিয়ার জন্য থ্রোট এক্সারসাইজ এবং লাংস ক্যাপাসিটি রেগুলেশন এক্সারসাইজ নিয়মিত করতে পারেন- যেমন প্রতিটি শব্দ (A, E, I, O, U) উচ্চৈঃস্বরে বারবার বলেন ৩ মিনিট ধরে জিহ্বা উল্টো করে ৩ মিনিট ধরে রাখুন এবং পরে তিনবার দীর্ঘশ্বাস টানুন, মুখ বন্ধ করে ঠোঁট কাঁপান ৩০ সেকেন্ড করে, তিনবার মুখ খোলা রেখে চোয়াল ডানদিকে ৩০ সেকেন্ড আবার বাম দিকে ৩০ সেকেন্ড ধরে রাখুন-মুখ হাঁ করে আলজিহ্বা উপরে-নিচে নামানো ৩০ সেকেন্ড করে- সাধারণত যে নাক ডাকে সে টের পায় না যে নাক ডাকছে। বেশির ভাগ সময়ই তার সঙ্গী বা আশপাশের লোক নাক ডাকার বিষয়টি লক্ষ্য করে। অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় মূলত গলবিলের গহ্বর সংকুচিত হয়ে থাকে বিধায় এর তিন রকমের চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করেন বিশেষজ্ঞরা। তার মধ্যে সবচেয়ে সফল চিকিৎসা হলো সিপিএপি (CPAP) বা কন্টিনিউয়াস পজিটিভ এয়ারওয়ে প্রেশার পদ্ধতি। তাই এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
অন্যদিকে, আবহাওয়া পরিবর্তনের এই সময় স্বর ও সুরের কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এ বিষয়ে যত্নবান হতে হবে। কণ্ঠস্বর ভালো রাখার কিছু কৌশল : চা, কফি, কোমলপানীয় গ্রহণে সাবধান হতে হবে। খেতে হবে পরিমিত। * দিনে অন্তত আট থেকে দশ গ্লাস পানি পান করার অভ্যাস করতে হবে। * ঝাল খাবার বর্জন করতে হবে। ঝাল থেকে বেড়ে যায় পাকস্থলির অ্যাসিড। আর তা উঠে আসতে পারে খাদ্যনালি বেয়ে, যাকে বলা হয় রিফ্লাক্স।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ
১৯মার্চ,২০২১ তারিখে প্রকাশিত বাংলাদেশ প্রতিদিন থেকে সংগৃহীত ।
fb- @jshongjog / jonosongjognews@gmail.com
পাঠকের মন্তব্য