। নাজনীন আলম।
নেতাকর্মীদের ক্ষোভের প্রতীকে পরিণত হয়েছে নৌকা! নজীর বিহীন উন্নয়নের পরেও তৃণমূলে তীব্র অসন্তুষ্টি।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সবাই নৌকা পেতে মরিয়া। কেন্দ্রের কঠোরতার পরেও কেনাবেচা থামছে না! তাই ২/৪ জন নেতা/জনপ্রতিনিধিকে ম্যানেজ করার জন্য চলছে যত কর্মযজ্ঞ। জননেত্রীর দূর্দিনের কর্মীদের দিকে তাকানোর সময় প্রার্থীদের নেই, দরকারও নেই। এলাকাবাসী ও জনগণের কল্যাণে কাজ করা যে বোকামী ছাড়া কিছুই নয়- এরই মধ্যে তার প্রমাণ প্রার্থীরা পেয়ে গেছে। ফলে উন্নয়ন, সেবা ও সহযোগিতা বঞ্চিত হচ্ছে প্রায় প্রতিটি এলাকার জনগণ ও দলীয় নেতাকর্মী।
সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড বেগবানসহ দলীয় নেতাকর্মীদেরকে মূল্যায়ন ও সম্মানিত করতে ইউনিয়ন নির্বাচনে নৌকা প্রতীক দিয়েছিলেন প্রিয় নেত্রী। কিন্তু কিছু রক্ত পিপাসু নৌকা প্রতীককে টাকা কামানোর মেশিনে পরিণত করে জননেত্রীর এ মহৎ উদ্যোগকে কলঙ্কিত করে চলছে। সম্প্রতি ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ এবং নোয়াখালী অঞ্চলের ১০টি উপজেলার শতাধিক ইউনিয়নের নির্বাচনে ৮০% নৌকার প্রার্থী গোহারা হেরেছে। যেহেতু বিদ্রোহী থামানো যাচ্ছে না, কাজেই নৌকাকে অপদস্ত করার অধিকার কারো নেই।
দেখা যায়, একটি ইউনিয়নে ৮/১০ করে নৌকা প্রত্যাশী হয়। নৌকা পায় একজন, না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয় সবাই। যিনি নৌকা পান তার প্রতি সর্বোচ্চ ২০% আওয়ামী সমর্থক খুশী হয়; আর বিক্ষোব্ধ হয় কমপক্ষে ৮০% দলীয় নেতাকর্মী। শুধু তাই নয়, মনোনয়ন না পাওয়ায় ঐ ৮০% নেতাকর্মীর শত্রুতে পরিণত হন ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা আ’লীগ নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় এমপি। এমনকি, সমালোচনায় তীরবিদ্ধ হতে হয় বিভাগীয় সাংগঠনিক টীমসহ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে।
অনেক এলাকাতেই আওয়ামী লীগকে অজনপ্রিয় করে দিচ্ছে নৌকা। অনেক ক্ষেত্রেই দলীয় নেতা কর্মীগণ কোমর বেঁধে মাঠে নেমে নৌকার অযোগ্য প্রার্থীকে ফেল করিয়ে দিচ্ছে। নির্বাচন সুষ্ঠ হলেই যোগ্য প্রার্থীগণ বিদ্রোহী হয়েও জিতে যাচ্ছে। জনগন ক্ষুব্ধ; দলীয় নেতাকর্মীরাও ক্ষুব্ধ। এই ক্ষুব্ধতা নৌকা প্রতীক এবং দলীয় হাইকমান্ডের দিকে দিনে দিনে ধাবিত হচ্ছে। আজীবন নৌকায় ভোট দিয়ে আসা দলীয় নেতা কর্মীদের অভ্যাস পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে; নৌকাকে বানিয়ে দেয়া হচ্ছে ক্ষোভের প্রতীক- যা আওয়ামী লীগের সর্বনাশ ঢেকে আনছে।
আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে ইউনিয়নে নৌকা বাতিল এখন সময়ের দাবী। আগামী ১৯/১১/২১ তারিখের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় দলীয় সভানেত্রীর সঠিক সিদ্ধান্ত আশা করছি।
(লেখিকার ভেরিফাইড এফবি পেজ থেকে সংগৃহীত)
লেখিকা -
কার্যনির্বাহী সদস্য - জেলা আওয়ামী লীগ, ময়মনসিংহ
স:স:/জ:নি:
পাঠকের মন্তব্য