। মোহাম্মদ এ আরাফাত।
১৯৭১ এ পরাজিত পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী ‘আইয়ুব খান-ইয়াহিয়া খান’ ও তাদের দালাল রাজাকার-গোলাম আজমরা স্বাধীনতার সময় থেকেই এদেশের মুক্তিকামী মানুষদের বিতর্কিত করার সবরকম চেষ্টা করেছিল আর এর সবচেয়ে বড় উপাদান ছিল আওয়ামী লীগ’কে রুশ-ভারতের দালাল বলে আখ্যা দেওয়া। এরই ধারাবাহিকতায় এখনো পাকিস্তানি প্রেতাত্মাদের চোখে আওয়ামী লীগ ভারতের দালাল। কারণ পাকিস্তান ও তাদের এদেশীয় দালালরা মনে করে ভারতের ষড়যন্ত্রে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে।
যে আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে, সেই আওয়ামী লীগ কেন অন্য কোন দেশের দালালি করবে? তাহালে তো পাকিস্তানের দালালি করে, আপোষ করে, ক্ষমতা ভাগাভাগি করে নিতে পারতো।
আসলে বাংলাদেশে ভারতের দালাল বলে কিছু নেই। এদেশে যদি কোন দালাল থেকে থাকে, সেটা পাকিস্তানের। আর তারাই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তিকে ও বাংলাদেশপন্থীদের ভারতের দালাল বলে অপপ্রচার করে। ১৯৭১ সালেও পাকিস্তান ও তাদের এদেশীয় দালালরা মুক্তিযোদ্ধাদের ‘ভারতের দালাল’, ‘ভারতের চর’ - এসব কথা বলে অপপ্রচার করতো। যারা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে তারা দেশপ্রেমী হয়, তারা অন্য দেশের দালালি করতে পারে না। যারা দেশের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের পক্ষে দালালি করেছে তারাই আসল ও প্রমানিত দালাল।
সত্য কথা হলো, পাকিস্তানের দালালরা নিজেদের দালালিকে ডিফেন্ড করার জন্য বাংলাদেশের পক্ষের মানুষগুলোকে ‘ভারতের দালাল’ হিসেবে কাল্পনিকভাবে সামনে এনেছে – কারণ তাঁদের একটা পাল্টা পক্ষ তৈরি করতে হয়, তাঁদের অপরাজনীতি চালিয়ে যাবার জন্য। দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কারোরই যাওয়ার কথা না, কিন্তু ১৯৭১ সালে যারা দেশের বিরুদ্ধে গিয়েছিল তারা ছিল পাকিস্তানের দালাল, রাজাকার। রাজাকার গং হচ্ছে দেশবিরোধী একটা প্রতিষ্ঠিত সত্তা। এই রাজাকারের পরবর্তি প্রজন্মও জন্ম নিয়েছে এবং এরাই পাকিস্তানের বিজয়ে এত উল্লাসিত হয়, এবং পরাজয়ে এত কষ্ট পায়।
লেখক - রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও প্রভাষক
(লেখকের ভেরিফাইড এফবি পেজ থেকে সংগৃহীত। প্রকাশ -১৬ নভেম্বর ২০২১)
ম:প্র:/জ:নি:
পাঠকের মন্তব্য