। কাজী গুলশান আরা।
খুবই অদ্ভুত যে কোন কিছুর লেজ ধরে টানাটানি আমাদের একটা স্বভাবে দাড়িয়েছে।
লিখেছিলাম মুরাদ সাহেবের ভয়ঙ্কর নারী বিদ্বেষী কথা নিয়ে আর রাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থা নিয়ে, তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে মেয়েদেরকে হেনস্থা করা নিয়ে।
হ্যাঁ তার কিছুদিন আগে তার একটা বক্তব্যকে সমর্থন করে লিখেছিলাম যেটা আমি এখনও সমর্থন করি যে রাষ্ট্রের কোন ধর্ম থাকতে পারে না।
সঠিক কথাকে সমর্থন করা ব্যক্তিকে সমর্থন করা না, বিবেকবর্জিত মানুষ আমি না।
যেমন বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং আজন্ম আমরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হলেও আমি মনে করি দেশের দুবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধীদলীয় নেত্রী হিসেবে লম্বা সময় থাকার পর এই বয়সে এসে খালেদা জিয়া অবশ্যই সঠিক চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনে বিদেশে যেতে পারেন দন্ডিত আসামি হবার পরও। বরং রাষ্ট্রের উচিত সে দায়িত্ব নেয়া।
এ কথা বলার মানে কি আমি বিএনপির হয়ে গেলাম, কি অসহিষ্ণু জাতি আমরা!
কারো সাথে আমার মতের মিল না হতেই পারে, মানি তারা যা করেছে তা ক্ষমার অযোগ্য, তার সাথে আমি এক টেবিলে বসতে পারবো না কিন্তু দূর থেকে আমার মানবিকতার প্রকাশে আমাকে বাধা কোথায়?
মানি এই সমগ্র জাতির সাথে তারা বেঈমানি করেছে, তারা খুনি তবে পাবলিক সেন্টিমেন্ট এর কথা বলে হেফাজতের সাথে যেমন সন্ধি করা যায় এই মানুষটাকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিলে তেমন বড় কোনো ক্ষতি কিন্তু দেশের হয়না, বরং বেকুবদের অহেতুক আস্ফালন বন্ধ করা যায়।এমনকি রাষ্ট্র চাইলে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার চাদরে তাকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগও করে দেয়া যায়
প্রয়াত বাদল সাহেবের সে কথার সাথে আমিও একমত - সম্পর্কটা এখানে খুনির আর যাকে খুন করতে চাওয়া হয়েছিল তাঁর। তাঁর দুঃখটা আমরা কেউই বুঝবোনা বা অনুধাবন করতে পারবোনা। বাবা-মা-ভাই-বোন সব হারিয়ে নিজেকেও বারংবার একটার পর একটা হত্যা চেষ্টার মুখোমুখি হতে হয়েছিল এই জিয়া পরিবারের প্রচ্ছন্ন ছত্রছায়ায়।
এরপরও কিন্তু খুনির ছেলের মৃত্যুর কথা শুনে তিনি ছুটে গিয়েছিলেন সমবেদনা জানাতে যদিও সে দরজা খোলা হয়নি, তাঁর সমবেদনা খালেদা জিয়া গ্রহণ করতে চাননি।
এরপরও খালেদা জিয়াকে বন্দিত্ব থেকে মুক্তি দিয়ে তিনি মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন।
ইতিহাস যে কাউকে ছেড়ে দেয় না তার প্রমান খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়া রন্ধ্রে রন্ধ্রে অনুভব করছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চাইলেই খালেদা জিয়ার অনুভবের মাত্রাটা আরেকটু বাড়িয়ে দিতে পারেন। বিদেশে সুচিকিৎসার সুযোগ দিয়ে আরও কিছু দিন বাঁচিয়ে রাখুক তাকে যদি পারা যায়।
আরও কিছু দিন বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করে তাকে অনুধাবন করানো হোক মায়ের মৃত্যু শয্যায়ও অর্থ ও আর ক্ষমতার লোভে তার ছেলেও তার পাশে দাঁড়াচ্ছে না। তাকে অনুধাবন করতে দেয়া হোক তার সংসার যেমন বাঁচিয়েছিল বঙ্গবন্ধু, তার জীবন বাঁচানোর যুদ্ধে অংশীদার হচ্ছেন তারই কন্যা।
পুরো লেখাটা দুটি কারনে-
১. রাষ্ট্রের কোন ধর্ম হতে পারে না এটাই সত্য ! এটা খোদ খালেদা জিয়া বললেও আমি সমর্থন করবো। সুতরাং মুরাদ সাহেবের এই কথাকে আমি এখনও সমর্থন করি।
২. খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বিদেশে করার অনুরোধ রাখা হোক এটাও আমি চাই। ওদেরকে অযথা আস্ফালন করিয়ে sympathy আদায় করতে দেবার দরকার নাই।
আর এই দুই কারনে আমাকে নাস্তিক এবং বিএনপি জামাত বলারও কোন প্রয়োজন নেই।
লেখিকা -
লেফটেন্যান্ট (অব:)
আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, সংযুক্ত আরব আমিরাত আওয়ামী লীগ
( ৯ডিসেম্বর প্রকাশিত লেখিকার এফবি পেজ থেকে সংগৃহীত)
দৃ:আ:/জ:নি:
পাঠকের মন্তব্য