। সেবীকা রানী।
দৈনিক ইত্তেফাকের সঙ্গে আমার সম্পর্ক দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময়। এই পত্রিকার জন্মলগ্নের ইতিহাস শুনেছি সিনিয়র সহকর্মীদের কাছে। এই পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া। তিনি সাংবাদিকতার অগ্রসৈনিক, পথপ্রদর্শক। তার প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাই।
আমার পর্যালোচনা- ইত্তেফাক শুধু একটি পত্রিকা নয়, এটি স্বাধীনতা সংগ্রামের পতাকা। বাংলার স্বাধীনতা আন্দোলন, সংগ্রামে ইত্তেফাকের ছিল ঐতিহাসিক ভূমিকা। ইত্তেফাকের প্রথম পর্যায় ছিল উপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রামের। তারপর পত্রিকাটি নিয়োজিত হয় স্বাধীনতা সংগ্রামে।
তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার মৃত্যুর পরে পত্রিকাটি নানা জটিলতা অতিক্রম করেছে। বর্তমানে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার ছোট ছেলে জনাব আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর তত্ত্বাবধানে এবং তাসমিমা হোসেনের সম্পাদনায় পত্রিকাটি নিরপেক্ষ এবং প্রতিষ্ঠিত। প্রথম যুগের ইত্তেফাক ছিল দলীয় পত্রিকা, আওয়ামী লীগের সমর্থক। এখন পত্রিকাটি নিরপেক্ষ। জনাব আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর সম্পাদনায় পত্রিকাটি দলীয় থেকে বের হয়ে আসে। হয় নিরপেক্ষ ।
ইত্তেফাক জন্ম থেকে স্বাধীনতা আন্দোলনের পতাকা বহন করছে। দেশে আজ বহু পত্রিকা থাকতেও সাধারণ পাঠক এখনো ইত্তেফাককেই বেছে নিচ্ছেন।
স্বাধীনতা সংগ্রামে ইত্তেফাককের উপর বহু নির্যাতন হয়েছে। একাত্তর সালে পত্রিকাটির ভবন, প্রেস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে পত্রিকাটির পুনরুজ্জীবন ঘটান জনাব আনোয়ার হোসেন মঞ্জু।
ইত্তেফাকের সঙ্গে দীর্ঘসময় যুক্ত থাকতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করি। এই পত্রিকার সঙ্গে আমার আত্মার সম্পর্ক। আমি ইত্তেফাকে এসেছিলাম শূন্য হাতে। আজ পেয়েছি অজস্র সম্মান। আমি যা কিছু হয়েছি সবই ইত্তেফাককে ঘিরে।
ইত্তেফাক নিরপেক্ষ, তবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও জাতীয়তাবাদে কোনো আঘাত আসলে ইত্তেফাক তা রুখে দাঁড়ায় এখনো। স্বাধীন বাংলার ইতিহাস আর ইত্তেফাকের ইতিহাস অবিচ্ছেদ্য। করোনার এই মহামারী অতিক্রমে করেও পত্রিকাটি বেঁচে আছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার এই রক্ষাকবচটি আরো বাঁচবে। আমি প্রার্থনায় রাখছি ইত্তেফাক চিরজীবী হোক।
————————-
শুভেচ্ছা নিবেদক
সিনিয়র সাংবাদিক, দৈনিক ইত্তেফাক
দপ্তর সম্পাদক, বিএফইউজে
(২২ডিসেম্বর,২০২১ তারিখে প্রকাশিত সেবীকা রানীর টাইমলাইন থেকে সংগৃহীত)
শু:স:/জ:নি:
পাঠকের মন্তব্য