।খোজেস্তা-নূর-ই নাহরীন।
সম্পাদক - পূর্বপশ্চিম বিডি
অনেকেই হয়তো বলবেন, টাকার পরিমাণ নয়—সম্মানই গুরুত্বপূর্ণ।
কিন্তু তবুও কথা রয়ে যায় নিঃস্বার্থ ভাবে এতোগুলো মানুষের জীবন বাঁচানোর তাগিদ কি বাস্তবিক অর্থেই কোন মূল্য বহন করে না ?
গত বৃহস্পতিবার ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে আগুন লেগে ৪৬ জন মানুষ মারা গেছেন । আগুন লাগার পর নদীতে লাফিয়ে পড়েছেন অনেকে। তখন প্রায় ৩০০ যাত্রীকে বিনা ভাড়ায় পারাপার করার পুরষ্কার হিসেবে ট্রলারচালক মিলন খানকে নগদ পাঁচ হাজার টাকা তুলে দেন জেলা পুলিশ কার্যালয় থেকে।
৩০০ যাত্রীর জন্য ৫০০০ টাকা হলে পার যাত্রীর জীবনের দাম ১৬.৬৬ টাকা। তদন্ত কমিটি গঠন করলে দেখা যাবে, অতটুকু দূরত্বের জন্য আসল ভাড়া হয়তো ছিলো ১৫ টাকা। তাহলে প্রত্যেক মানুষের জীবন বাবদ মিলন খান ১ টাকা ৬৬ পয়সা বেশি পেলেন। ১ টাকা ৬৬ পয়সা হিসেবে ৩০০ যাত্রীর জন্য তিনি অতিরিক্ত পেয়েছেন ৩৯৮ টাকা!
টাকার আশায় নয় দায়িত্ব বোধ থেকে কর্তব্যের তাগিদে এতোগুলো মানুষকে সাহায্য ও সহযোগিতা করেছেন মিলন খান । টাকার অঙ্ক তাঁর কাছে নিশ্চয়ই বিবেচ্য বিষয় নয়। তবুও মনে করি তাঁর কাজকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি বরং অনেক ছোট করে দেখা হয়েছে।
আমার প্রশ্নটা অন্য জায়গায়। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে ধনী মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। ধনীরা আরও বেশী ধনী হয়েছেন। কেবল গত বছরের বাজেট পর্যালোচনায় দেখা যায় মাত্র ১০০০ লোক ১৬০০০কোটি টাকা অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করেছেন।
এই হাজার হাজার কোটি টাকার মালিকদের মাঝে একজনও কি নেই যিনি মিলন খানকে পুরস্কিত করে জন সেবায় সাধারণ মানুষদের উদ্বুদ্ধ করবেন ?
নাকি অর্থ ছাড়া দেশপ্রেম তাঁদের মাথায় নেই ?
এই যে ভিন্ন ভিন্ন দলের এতো এতো রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বক্তৃতার সময় নামের আগে জনদরদী বিশেষণ শুনি তাঁরা কোথায় ?
কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না যেহেতু চলুন আমরাই না হয় টাকা তুলে তাঁর কাজের প্রশংসা করি।
কেউ কি মিলন খানের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন ? যদি পারেন তবে জানান। আমি তাঁর অসামান্য কাজের প্রশংসা এবং ভালোবাসা স্বরূপ সাধ্যের মধ্যে যৎসামান্য অর্থ তাঁর হাতে তুলে দিতে চাই। আমার সাথে চাইলে আপনারাও থাকতে পারেন। কে কে থাকবেন আওয়াজ দেন।
ধন্যবাদ।
…………………………………..
(২৯ডিসেম্বর,২০২১ তারিখে প্রকাশিত লেখিকার টাইমলাইন থেকে সংগৃহীত)
মা:/স:/জ:নি:
পাঠকের মন্তব্য