। মুনজুরুল করিম।
আচ্ছা, বিশ্বনেতারা তো সব সময়ই শান্তির কথা বলেন। তাহলে অস্ত্র, ক্ষেপণাস্ত্র, মারণাস্ত্র, পরমাণু অস্ত্র- এসবের কি দরকার! কেউ কেউ বলেন, নিজেদের রক্ষার জন্যই অস্ত্রে স্বয়ং সম্পূর্ণ হতে হয়। এবার চিন্তা করুন, আপনি বিশাল সেনাবাহিনী তৈরি করলেন, সেরা সেরা সব অস্ত্রের মালিক হলেন। তারপর যদি পৃথিবীতে শান্তি এসে যায় তাহলে সেসবের ব্যবহার কি? ব্যবহার না থাকলে আপনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাহলে উপায়, শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে যুদ্ধ লাগিয়ে দিতে হবে। আর সেটা যদি সফলভাবে আপনি করতে পারেন তাহলে কয়েক বছরের জন্য আপনার ব্যবসা হয়ে গেলো। একদিকে অস্ত্র বিক্রি করবেন, পরামর্শ বিক্রি করবেন এমনকি নিজের বাহিনীর একটা বড় অংশও সেখানে মোতায়েন করে রাখতে পারেন। এর জন্য আপনি বিশ্বের ধনী দেশগুলোকে দোষ দিতে পারেন। কিন্তু আমি দোষ দেই না। কারণ, আমি যদি আমেরিকা হতাম তাহলে সেটাই যুক্তিযুক্ত মনে হতো। এটাই পাওয়ার গেম। সেই প্রাচীনকাল থেকে এটাই চলে আসছে।
এখন আসা যাক, রাশিয়া-ইউক্রেন প্রসঙ্গে। ইউক্রেনে কি রাশিয়ার সাথে ন্যাটো জোটের একটা যুদ্ধ লাগতে যাচ্ছে? আমার কাছে মনে হয় না। কে যুদ্ধ করবে রাশিয়ার সাথে?
ইউক্রেন?
না, ইউক্রেনের সেই শক্তি-সাহস কোনটাই নাই। ইউক্রেনের অন্য বন্ধু দেশ উস্কানি দিয়ে চেষ্টা করতে পারে যুদ্ধটা লাগিয়ে দেবার। কারণ তাতে যুদ্ধের ব্যবসাটা জমে উঠতে পারে। কিন্তু ইউরোপের যেসব দেশ অনেক হম্বিতম্বি করে বক্তব্য দিচ্ছে, তাদের কেউই রাশিয়ার সাথে যুদ্ধে জড়াতে চাইবে না। কারণ, তাতে তাদের ক্ষতির পরিমাণ বেশি হবে। আর রাশিয়াও তো হিসাবনিকাশ না করে মাঠে নামেনি।
তাই কিছুদিন হুমকি-ধমকি চলবে, ন্যাটো জোট আর জাতিসংঘের মিটিং হবে, কিছু নিষেধাজ্ঞা আসবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। এর মধ্যে রাশিয়া এগোতেই থাকবে। হয়তো একটা সময় পুরো ইউক্রেনকেই নিয়ে নেবে। তারপর অস্ত্র তাক করে রাখবে ইউরোপের দিকে।
এর মাধ্যমে বিশ্বের শান্তি ব্যবসার হাত বদল হয়ে যাবে হয়তো। তারপর একটা সময় হয়তো দেখা যাবে রাশিয়া সারা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করে যাচ্ছে।
এভাবেই ক্ষমতার পালাবদল হয়। প্রত্যেক ইতিহাসের পালাবদলের সময়ই কিছু এগ্রেসিভ মানুষ সামনে চলে আসে। তারাই অনেক কিছু ওলটপালট করে দিয়ে যায়।
(২৩ফেব্রুয়ারি,২০২২ তারিখে প্রকাশিত লেখকের টাইমলাইন থেকে সংগৃহীত)
আ:স:/জ:নি:
Email- prnews1.gmail.com
পাঠকের মন্তব্য